বিশেষ প্রতিবেদক
শ্রেষ্ঠ উপজেলা শিক্ষা অফিসার রমিতা ইসলামকে সংবর্ধনা দিতে ১৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫৩ জন শিক্ষকের নিকট থেকে এক হাজার করে এক লাখ ৫৩ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। তা দিয়ে দামি শাড়ি, গহনা, স্বামীর স্যুট-প্যান্ট ও ছেলের শার্ট-প্যান্ট এবং ক্রেস্ট দেওয়া হয়। এতে তার সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন সংবর্ধনা নেওয়া আরও পাঁচ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের কারণে বিভাগীয় উপপরিচালক অফিস থেকে তাদের কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে। গত ১৪ ডিসেম্বরের চিঠিতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে কেন ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে সুপারিশ করা হবে না, তা জানাতে হবে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সৈয়দপুর ক্লাস্টারের শ্রীফলতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সংবর্ধনা নিয়েছেন। অনুষ্ঠানের জন্য ১৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫৩ জন শিক্ষকের নিকট থেকে এক হাজার করে এক লাখ ৫৩ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। তা দিয়ে দামি শাড়ি, গহনা, স্বামীর স্যুট-প্যান্ট ও ছেলের শার্ট-প্যান্ট এবং ক্রেস্ট দেওয়া হয়। আরও চারটি ক্লাস্টারে শিক্ষা অফিসার অনুরূপ কাজ করেছেন।
এ নিয়ে প্রকাশিত খবরের আলোকে বিভাগীয় উপপরিচালের চিঠিতে বলা হয়, ‘কোভিডকালীন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আপনার (শিক্ষা অফিসার) পাশাপাশি সব সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অনুষ্ঠানে আসন গ্রহণ করেন। শিক্ষকরা উপস্থিত হয়ে গণজমায়েত করেছেন, যা অনভিপ্রেত। এ ধরনের কাজে প্রাথমিক শিক্ষার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা শিক্ষা অফিসার রমিতা ইসলাম বলেন, ‘একটি ক্লাস্টারে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানটি হয়েছে। কিন্তু খবরে মিথ্যা তথ্য লেখা হয়েছে। আরও চারটি সংবর্ধনা নিয়েছি। এ ধরনের খবরের কোনও ভিত্তি নেই। আমাকে শোকজ করা হয়েছে, শিগগিরই জবাব দেবো।’
কালিয়াকৈরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘উপজেলার সব সহকারী কর্মকর্তা ও উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও শিক্ষা অফিসারের পরিশ্রম ও নেতৃত্বে শ্রেষ্ঠ উপজেলা শিক্ষা অফিসার হয়েছেন তিনি। মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে উপজেলার শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অবিচার করা হয়েছে।’
এ অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় উপপরিচালক মো. ইফতেখার হোসেন ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ পাঁচ সহকারী শিক্ষা অফিসারকে শোকজ করা হয়েছে। তারা এর ব্যাখ্যা দিক, সত্য না মিথ্যা, জবাব দিক।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘যতটুকু খবর পেয়েছি, চাঁদা তুলে শাড়ি-গহনা নেওয়ার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন ছিল।’
Discussion about this post