শিক্ষার আলো ডেস্ক
যে জাতি যত বেশি সুশিক্ষিত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং সৃজনশীলতা বিকাশে অঙ্গীকারাবদ্ধ সে জাতি তত বেশি উন্নত। বিজ্ঞানের এই যুগে নিরক্ষরতা অভিশাপ ছাড়া আর কিছু নয়। তাই আজ শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরির্বতন এসেছে। ২০০২ সালে এলাকার প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান অক্সিজেন স্কুল এন্ড কলেজ (ওএসসি) এর অগ্রযাত্রা শুরু হয়। যার সফলতার ছক তার নামের মধ্যেই রয়েছে। প্রতি বছর এস.এস.সি/জে.এস.সি/পি.এস.সি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ+ সহ শতভাগ পাশ ফলাফলে এলাকায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। দক্ষ/অভিজ্ঞ/উচ্চশিক্ষিত ম্যানেজমেন্ট–এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানে সফল হওয়ায় বর্তমান ক্যাম্পাস–১, ক্যাম্পাস–২ হোস্টেল সহ লেখাপড়া করার একমাত্র আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রুপে অভিভাবকবৃন্দের আস্থা অর্জন করেছে অক্সিজেন স্কুল এন্ড কলেজ। শিক্ষা কার্যক্রমে স্কুলের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।
প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান–অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমদ,বি এ (অনার্স) এম এ (ইংরেজী),বিভাগীয় প্রধান (ইংরেজী বিভাগ) বিজয় স্মরনী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ।
নতুন কারিকুলামে শিথন
স্কুলের পরিচালক ও অধ্যক্ষ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, (বিএসসি, বিএড, এমএসসি, এলএলবি )শিক্ষার মান ও পদ্ধতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, দক্ষ ও আন্তরিক একদল শিক্ষক শিক্ষিকার সমাবেশ ঘটানো হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। নিয়মিত ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে শিক্ষকবৃন্দের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়।
২০২৩ সাল থেকে চালু হওয়া নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে সরকারী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে আমাদের স্কুলের সকল শিক্ষকশিক্ষিকা।আমাদের শিক্ষকগণের কাছে নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণ বেশ গ্রহণযোগ্য হয়েছে এবং আমরা গত একবছর ক্লাসে অত্যন্ত সফলভাবে নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়েছি।
গেলো বছরে প্রথম,৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির পর এ বছর থেকে দ্বিতীয়,তৃতীয়, ৮ম ও নবম শ্রেণিতে নুতন কারিকুলামের প্রচলন হতে যাচ্ছে। নুতন এই শিখন পদ্ধতি সফল করতে প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ ও পরেবেশ আমাদের স্কুলে রয়েছে। আশা করছি এ বছর গত বছরের চাইতেও উৎসাহ ও আনন্দের সাথে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পাঠকে উপভোগ করবে।
যেহেতু বর্তমানপাঠক্রম একটি দক্ষতা-ভিত্তিক পাঠ্যক্রম।তাই নতুন শিখন অভিজ্ঞতা অর্জন করাতে গিয়ে নতুন শিখন কৌশল রপ্ত করতে হয়েছে শিক্ষকদের।
খেলাধুলা ও সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যেন ক্লাসের পাঠ ক্লাসেই শেষ করতে পারে, যাতে করে বাড়ির কাজ বা হোমওয়ার্ক কমানো সম্ভব হয়,তাও নিশ্চিত করি আমরা।সবশেষে প্রায়োগিক দক্ষতা কতটুকু লাভ করলো তা মূল্যায়ন করেন অভিজ্ঞ শিক্ষকবৃন্দ।আমাদের প্রতিটি ক্লাসে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী থাকায় দলগত কাজ বা মূল্যায়ন সেশন সফলভাবে ফলপ্রসূ হয়।
নতুন এই শিক্ষাক্রমে মুখস্থনির্ভর লেখাপড়ার চর্চা থেকে বেরিয়ে আসবে শিক্ষার্থীরা ।শিক্ষাক্রমে তথ্য মনে রাখার ক্ষমতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা এবং তথ্য ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানের ক্ষমতার উপর। আমরা ক্লাসে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট তথ্য তুলে ধরি এবং প্রাসংগিক উপকরণ প্রদর্শন করি।দলগত কাজে হাতে কলমে বিভিন্ন প্রকল্প উপস্খাপনের মাধ্যমে যে কোন জটিল বিষয় অত্যন্ত উপভোগ্য ও সহজবোধ্য হয়ে ওঠে।
কম্পিউটার শিক্ষা
বর্তমানে পুরো পৃথিবীই একটা আইসিটি ভিলেজ। বিশ্বায়নের এই যুগে কম্পিউটার বিহীন শিক্ষার কথা কল্পনাই করা যায় না। এই কথা মাথায় রেখে ও.এস.সি সকল শ্রেণীতে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। কম্পিউটার শিক্ষক জানান, কে.জি ক্লাস এবং শিশুদের বিভিন্ন ছড়ার সিডি গেমস, পেইন্টিং, ড্রয়িং ইত্যাদি সফটওয়্যার এর মাধ্যমে কম্পিউটার প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত করা হয়। উচ্চতর শ্রেণীতে (MS WORD, MS EXCEL,MS ACCESS,POWER POINT, GRAPHICS PROGRAME) সমূহ শিখানো হয়। শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ২ দিন কম্পিউটার ক্লাস এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কেজি থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত ।
শিখন পদ্ধতি
শিখন পদ্ধতি সম্পর্কে সিনিয়র শিক্ষিকা পারভীন আক্তার বলেন,
নতুন কারিকুলাম অনুসারে বছরের শুরুতেই একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনায় শিক্ষাক্রম পরিচালনার নিমিত্তে পুরো বছর একটি নির্দিষ্ট এডুকেশন প্ল্যান তৈরী করে নেওয়া হয়। প্রতি তিন মাসের গঠিত সকল বিষয়ের সকল পাঠ্যসমূহ একটি নির্দিষ্ট ছকে পূর্বে পরিকল্পিত রূপে লিখিত আকারে প্রিন্সিপ্যালের কাছে পেশ করা সকল শিক্ষকের জন্য বাধ্যতামূলক।
বি.এড কার্যক্রম অনুসারে এই নির্দিষ্ট লেসন প্ল্যান অনুসারে শিক্ষার্থীদের পাঠ দেয়া হয়। শিশুদের মনন ও মেধা বিকাশের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন এখনকার শিক্ষকগণ। শিশুদের বিভিন্ন পাঠ উপযোগী যেমন: কম্পিউটার,রাইমস ও বর্ণমালার সি.ডি, প্লাস্টিক মেটার, পুতুল, খেলনা ও ছবির মাধ্যমে পাঠকে আকর্ষণীয় এবং সহজবোধ্য করে তুলে শিক্ষার্থীদের কাছে। শিশুদের বেত প্রয়োগে শাস্তি নিষিদ্ধ। উচ্চ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে প্রয়োজনীয় উপকরণ। অভিজ্ঞ এবং দক্ষ শিক্ষকগণের আন্তরিকতায় অপেক্ষাকৃত দূর্বল ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে বিশেষ নজরদারী এবং স্পেশাল কোচিং ক্লাস।
সহ–শিক্ষা কার্যক্রম :
একাডেমিক ডিরেক্টর হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী স্কুলের অন্যতম পরিচালক মুসলিম উদ্দীন কাদেরী(এম,এ) বলেন “মান সম্পন্ন শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শৃঙ্খলা শিক্ষার জন্য নিয়মিত পিটি প্যারেড, স্কাউটিং ও খেলাধুলা আয়োজন করে থাকি আমরা । নিয়মিত লেখাপড়া, পাশাপাশি সুস্থ মানসিকতার জন্য চাই সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা । তাই সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসাবে আমরা অংকন, গান, কবিতা, গল্প বলা ইত্যাদি বিবিধ সাংস্কৃতিক চর্চায় উৎসাহী করে তোলার জন্য ছাত্র–ছাত্রীদের কালচারাল টিচারের মাধ্যমে নিয়মিত প্রশিক্ষণ এর ব্যবস্থা করেছি।
এছাড়া প্রত্যেক শ্রেণীতে চারুকলা (অংকন) সংগীত ও SPOKEN ENGLISH, ধর্মীয় শিক্ষা ও কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অভিজ্ঞ আর্ট শিক্ষক দ্বারা সপ্তাহে দুদিন আর্ট ক্লাস পরিচালনা করা হয়। অভিজ্ঞ সাংস্কৃতিক শিক্ষক দ্বারা সংগীত, নৃত্য, তবলা ইত্যাদি প্রশিক্ষণ কোর্সের ব্যবস্থা রয়েছে। শুধূ সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড নয় ভর্তিকৃত ছাত্রছাত্রীদের অভিজ্ঞ মৌলভী দ্বারা কুরআন হাদিস শিক্ষা ও আমল আখলাকের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
পুঁথিগত জ্ঞানের বাহিরে বিশাল জ্ঞান সমুদ্রের নুড়ি কুড়াতে বই পাঠের কোন বিকল্প নেই। তাই ও.এস.সি তে রয়েছে সাহিত্য শিল্প, উপন্যাস বিজ্ঞান ভিত্তিক বই সম্পন্ন লাইব্রেরী। এছাড়া প্রতিবছর বার্ষিক শিক্ষা সফর, বনভোজন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় মহাড়ম্বে। দেশাত্ববোধ ও দেশপ্রেমকে নতুন প্রজন্মের মাঝে সঞ্জীবিত করার লক্ষ্যে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, শহিদ দিবস সহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস সমূহ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হয় এই বিদ্যালয়ে”।
আবাসিক সুবিধা :
বিদেশে অবস্থানরত (প্রবাসী) এবং গ্রামাঞ্চলের সচেতন অভিভাবক ও শহরের কর্মব্যস্ত অভিভাবক সহ যাদের সন্তানদের উন্নত শিক্ষার পরিবেশে রেখে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান তাদের জন্য অক্সিজেন স্কুল এন্ড কলেজে রয়েছে নিরাপদ ও মনোরম পরিবেশসমৃদ্ধ আবাসিক সুবিধা। হোস্টেলে শিক্ষাথীরা প্রতিটি মূর্হুত নিয়মিত রুটিন অনুসারে অতিবাহিত করে। মুসলিম শিক্ষার্থীদের কোরআন শিক্ষা এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য স্ব স্ব ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।
বিস্তারিত জানতে- বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, কুয়াইশ সংযোগ সড়ক, অক্সিজেন আবাসিক এলাকা বায়েজিদ, চট্টগ্রাম।
ফোন ; ০১৮১৪-৯৪১৮৩৭, ০১৮১৭-২২১৬১৬, ০১৮১৩-৬৯৭৭০৭
Discussion about this post