শিক্ষার আলো ডেস্ক
বিশ্বায়নের এ যুগে মানসম্মত, যুগোপযোগী ও বাস্তবমুখী শিক্ষা দান করে শিশুদের আগামী দিনের কর্ণধার হিসেবে গড়ে তোলাই সবার একমাত্র লক্ষ্য। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে কাঙ্খিত ফল লাভ ও উন্নতির পথে সঠিক দিকনির্দেশনা ও আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে কৌশলভিত্তিক পড়ালেখাকে আরো গতিময় ও প্রাণবন্ত করে তুলতে চকবাজার ,কে বি আমান আলী রোডে ‘কর্ণফুলী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ’ (EIIN-134444) প্রতিষ্ঠা করা হয় যা বর্তমানে চট্টগ্রামে একটি মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে। স্কুল নির্বাহী পরিচালক বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী প্রফেসর মো: খায়রুজ্জামান জানান আদর্শ এই বিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য নানা বৈশিষ্ট্য সম্মন্ধে।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক মন্ডলী ঃ
মানসম্মত শিক্ষাদানের জন্য মেধাবী, দক্ষ, পরিশ্রমী ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক–শিক্ষিকার বিকল্প নেই। উন্নত বিশ্বের আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতিরর অনুকরণে নিয়মিত বিষয়ভিত্তিক ওয়ার্কশপ ও মইক্রোটিচিং সহ আধুনিক পদ্ধতি, নবতর কলাকৌশল প্রয়োগ করে পাঠদান সহজতর, আকর্ষণীয় ও বিজ্ঞানসম্মত করার জন্য গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে এবং মাস্টার ট্রেইনার দ্বারা সৃজনশীল ট্রেনিং প্রদান করে শিক্ষকদের দক্ষতা ও কৌশল উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা হয়।২০২৪ শিক্ষা কারিকুলাম রুপরেখা বাস্তবায়নে সরকারি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে আমাদের স্কুলের সকল শিক্ষকশিক্ষিকা।
নতুন কারিকুলামে পাঠদান পদ্ধতি ঃ
এ প্রসংগে অভিজ্ঞ শিক্ষক অধ্যক্ষ সমরজিৎ দাস বলেন, একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ে পাঠ দান করা হয়। ৮ম, ৯ম এবং ১০ম শ্রেণীতে প্রতিদিন প্রথম ২০ মিনিট পূর্ববর্তী দিনের পড়ার উপর পরীক্ষা নেয়া হয়। ফলে বাসায় প্রতিটি ছাত্র–ছাত্রীকে পড়া শিখতে হয়। আবার শ্রেণীর পঠিত বিষয়ের উপর রয়েছে প্রশ্নোত্তর পর্ব। নানা শিক্ষা উপকরণের সাহায্যে আনন্দময় পরিবেশে ক্লাসের পড়া মুখস্থ করে আদায় করা হয়। ক্লাসে যা বোঝা যায়নি সে বিষয়গুলো পুনরালোচনা করা হয়।
আমাদের এখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ ক্লাস পরিচালনা করেন অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে। পাঠ উপস্থাপনের পর পঠিত বিষয়ের উপর রয়েছে প্রশ্নোত্তর পর্ব। ফলে কোন বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকলে তা ক্লাসেই পরিষ্কার হয়ে যায়। নানা শিখন উপকরণের সাহায্যে আনন্দময় পরিবেশে ক্লাসের পড়া মুখস্থ করে আদায় করা হয়। ক্লাসে যা বোঝা যায়নি সে বিষয়গুলো পুনরালোচনা করা হয়।
যেহেতু নতুন কারিকুলাম একটি দক্ষতা-ভিত্তিক পাঠ্যক্রম।তাই নতুন শিখন অভিজ্ঞতা অর্জন করাতে গিয়ে নতুন শিখন কৌশল রপ্ত করতে হয়েছে শিক্ষকদের।
খেলাধুলা ও সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যেন ক্লাসের পাঠ ক্লাসেই শেষ করতে পারে, যাতে করে বাড়ির কাজ বা হোমওয়ার্ক কমানো সম্ভব হয়,তাও নিশ্চিত করি আমরা।সবশেষে প্রায়োগিক দক্ষতা কতটুকু লাভ করলো তা মূল্যায়ন করেন অভিজ্ঞ শিক্ষকবৃন্দ।আমাদের প্রতিটি ক্লাসে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী থাকায় দলগত কাজ বা মূল্যায়ন সেশন ফলপ্রসূ হয়।
নতুন এই শিক্ষাক্রমে মুখস্থনির্ভর লেখাপড়ার চর্চা থেকে বেরিয়ে আসবে শিক্ষার্থীরা ।শিক্ষাক্রমে তথ্য মনে রাখার ক্ষমতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা এবং তথ্য ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানের ক্ষমতার উপর। আমরা ক্লাসে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট তথ্য তুলে ধরি এবং প্রাসংগিক উপকরণ প্রদর্শন করি।দলগত কাজে হাতে কলমে বিভিন্ন প্রকল্প উপস্খাপনের মাধ্যমে যে কোন জটিল বিষয় অত্যন্ত উপভোগ্য ও সহজবোধ্য হয়ে ওঠে।
মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ঃ
বর্তমানে মুক্তবাজার অর্থনীতির বিশাল প্রভাবে তথ্য প্রযুক্তির সমান্তরালে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে অত্র প্রতিষ্ঠান বদ্ধপরিকর। তাই প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্য হাই সেকশনগুলোতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে দ্রুত বেশ কিছু পাঠ আত্মস্থ করতে পারে।পাশাপাশি এ্যাপসের মাধ্যমে নিয়মিত উপস্থিতি ,বাড়ির কাজসহ অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য জানার সুযোগ রয়েছে।
কম্পিউটার ল্যাব ও বিজ্ঞানাগার ঃ
প্রগতিশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে ও নিজেকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে কম্পিউটার জ্ঞান এর বিকল্প নেই। যার ফলস্বরূপ ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীকে কম্পিউটার জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার জন্য আমাদের রয়েছে অনলাইন সুবিধাসম্বলিত আধুনিক সুসজ্জিত ও সমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাব।বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ রসায়ন,জীব এবং পদার্থ বিজ্ঞান ল্যাব ।
ডে–কেয়ার ব্যবস্থা ঃ
কর্মব্যস্ত অভিভাবক ও নিয়ন্ত্রণহীন সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকের সন্তানদের গতিশীল, সমৃদ্ধ ও সুনিয়ন্ত্রিত লেখাপড়ার জন্য অত্র প্রতিষ্ঠানে আছে সকাল ৮ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডে–কেয়ারের ব্যবস্থা। যেখানে তাদের ধর্মীয় অনুশাসন, স্কুলের যাবতীয় লেখপড়া পুনরায় প্রাইভেট টিচারের মাধ্যমে বিষয় ভিত্তিক শেখানো ও আদায় করার ব্যবস্থাসহ মানসম্মত টিফিন, দুপুরের খাবার ও ইনডোর ও আউটডোর গেমসের ব্যবস্থা থাকবে।
আবাসিক ব্যবস্থাপনা ঃ
এ প্রসংগে অধ্যক্ষ সমরজিৎ দাস বলেন,উন্নত ভবিষ্যতের জন্য সুশৃঙ্খল জীবনের বিকল্প নেই।তাই, শৃঙ্খলা ও পারিবারিক আবহের সমন্বয়ে আমরা আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বন্দোবস্ত করেছি উন্নত শিক্ষাপদ্ধতি,নিয়মানুবর্তিতা প্রশিক্ষণ,স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য মাসিক হেলথ চেক আপ , নিয়মিত ব্যায়াম ,মুসলিম শিক্ষার্থীর জন্য নামাজ ও কোরআন শিক্ষা,অন্য ধর্মাবলম্বীদের স্ব–স্ব ধর্মীয় অনুশাসন,চিত্ত বিনোদনের জন্য ইনডোর ও আউটডোর গেমস এবং ত্রৈমাসিক দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন। সার্বক্ষণিক শিক্ষকমন্ডলী ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের দ্বারা কোচিং ক্লাস পরিচালনার মাধ্যমে পরিচালিত হবে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত বিনির্মাণের পথ নির্দেশক এই আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা।
সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলী ঃ
ছাত্র ছাত্রীদের মানসিক প্রবৃদ্ধির জন্য বিনোদনমূলক কর্মকান্ডের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সামগ্রিক বিকাশ এবং সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলতে সঙ্গীত, আবৃত্তি, বক্তৃতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রয়েছে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অভিভাবক সমাবেশ, শিক্ষা সফর, আবাসিক ছাত্রদের আউটিং, ক্লাস পার্টিসহ জাতীয় দিবস সমূহের সাড়ম্বর আয়োজন।
এইভাবেই শিশুদের বোধগম্য পদ্ধতিতে আন্তরিক পাঠদান, প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষাধারা, কঠোর শৃঙ্খলায় সু–ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিগত এক যুগ ধরে চট্টগ্রামবাসীর আস্থা ও নির্ভরতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে এবং প্রতি বছর বেসরকারী বৃত্তি পরীক্ষায় প্রচুর ছাত্র–ছাত্রীর বৃত্তি লাভ এবং এসএসসি পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এ+ সহ শতভাগ পাশ করার কৃতিত্ব অর্জন করেছে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিস্তারিত জানতে ধুনির পুল, কেবি আমান আলী রোড , চকবাজার এই ঠিকানায় এবং ০১৯১৭–৭০৬৩১১,০১৮৪৮–৩৪৩৮৩৮ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
Discussion about this post