নিউজ ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। পড়াশোনার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৭ সালে এসব কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। অধিভুক্তির পর থেকে সেশনজটসহ নানান সমস্যা লেগেই আছে।
এবার শিক্ষার্থীদের খাতা পুনঃমূল্যায়নে ফেল থেকে পাস করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের এক বিভাগেই ৩৪ শিক্ষার্থী। বিষয়টি নিয়ে ঢাবি প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, চলতি বছরের গত ৩১ আগষ্ট সরকারি সাত কলেজের ২০১৮ সনের চতুর্থ বর্ষের ইংরেজি বিভাগের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়। প্রকাশিত ফলাফলে ছিল চরম বিপর্যয়। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সাত কলেজের মোট ৮৮৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২৮৪ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়। পাসের হার ছিল মাত্র ৩২ শতাংশ।
এরমধ্যে সরকারি তিতুমীর কলেজের ইংরেজি বিভাগের ২০৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে শুধুমাত্র ‘আমেরিকান পোয়েট্রি’ বিষয়েই ফেল করে ১০৮ জন শিক্ষার্থী। এরপর বিভাগ কর্তৃপক্ষ এই সাবজেক্টের খাতা পুনঃমূল্যায়নের জন্য ঢাবি বরাবর আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে খাতা পুনঃমূল্যায়নে ফেল করা ৩৪ জন শিক্ষার্থীর পাস আসে।
এ বিষয়ে সরকারি তিতুমীর কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সালেকা মাহমুদ বলেন, আমাদের বিভাগ থেকে আমরা অধ্যক্ষের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর খাতা পুনঃমূল্যায়নের আবেদন করেছি। এতে আমার জানামতে ৩৪ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে।
প্রথমে ফেল পরে পুনঃমূল্যায়নে পাস। এমনটা হবার কারণ কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা এর সাথে সম্পর্কিত তারা এটার কারণ ভালো বলতে পারবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খাতা মূল্যায়নসহ সবকিছু দেখাশোনা করে।
এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সরকারি তিতুমীর কলেজর ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী রাজিয়া সুলতানা বলেন, প্রথমদিন রেজাল্ট পাওয়ার পর খুব হতাশ লাগছিলো এই ভেবে যে ফেল করার মতো পরীক্ষা তো দেইনি, গ্রেড কম আসুক বা বেশি আসুক, ফেল অন্তত করব না। স্যারদের প্রতি সম্মান রেখে এতটুকু বলতে চাই যে খাতা মূল্যায়নের মতো এমন স্পর্শকাতর ব্যাপারে যেনো আরেকটু আন্তরিক থাকেন উনারা। এই যে আমাদের ৩৪ জনের ফল পরিবর্তন হলো, আমাদের উপর প্রথমে ফেলের বোঝা চাপিয়ে দেয়ার ফলে যে মানসিক যন্ত্রণায়দর মধ্য দিয়ে আমরা গিয়েছি সেটা অবর্ণনীয়।
এদিকে ঢাকা কলেজেও ঘটেছে ফলাফল বিপর্যয়ের ঘটনা৷ প্রতিষ্ঠানটির ইংরেজি বিভাগের (২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) ১ম বর্ষের পরীক্ষার ফলাফলেও ঘটেছে ব্যাপক বিপর্যয়। শিক্ষার্থীরা জানান, প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে সকল বিষয়ে পাশ করেছ মাত্র ২৭-৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী। অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই অভিযোগ করছেন, প্রশাসনের গাফিলতির জন্যই এমন ভয়াবহ বিপর্যয়। তবে কি কারণে এত বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী ফেল করেছে তার কারণও অজানা।
ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক পুরঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, এসব সমস্যা কাটিয়ে তুলতে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে।
ফলাফলে কেন এমন বিপর্যয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় ইংরেজিতে দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও অনেক শিক্ষার্থীই না বুঝে ইংরেজি বিভাগ পছন্দ করে যার ফলে পরবর্তীতে কোর্সগুলো করতে তাদের কষ্ট হয়ে যায়। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি যাতে এমন বিপর্যয় রোধ করা যায়।এক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের আরো আন্তরিকতার সাথে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী হতে হবে।
Discussion about this post