বিশেষ প্রতিবেদক
ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদের পোর্টালে উপবৃত্তি পাওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তথ্য এন্ট্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নতুন নিয়মে প্রথমবারের মত সব প্রধান শিক্ষকদের নিজস্ব ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার ডাটা লাইভ এন্ট্রি করতে হচ্ছে।
আগামী রোববারের (১০ জানুয়ারি) মধ্যে উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য এন্ট্রির করতে পারবেন প্রধান শিক্ষকরা। গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য দিতে নগদ তাদের পোর্টাল ডাটা এন্ট্রির জন্য উন্মুক্ত করেছে। যদিও শিক্ষকরা সময় বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষকরা বলছেন, তথ্য এন্ট্রি করতে তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
জানা গেছে, নগদের কর্মকর্তা মো আরিফুল ইসলাম (০১৭০৪১৬১১৬৩) ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে আছেন। তাপস আহমেদ (০১৭০৪১৬১৪৫৯) খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের এবং আসির আবরার আহমেদ (০১৭০৪১৬১৪৭৮) রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন। জেলার মনিটরিং কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা নিজ নিজ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগযোগ করে শিক্ষকদের সমস্য সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।
এছাড়া অনেকে পাসওয়ার্ড হারিয়ে ফেলছেন। তাদের সচেতন হতে বলেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। আর নতুন প্রধান শিক্ষক বা মাঠপর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা pesp.suppurt@nagad.com.bd ঠিকানায় ইমেইল করে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে পারবেন বলেও জানানো হয়েছে।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের মধ্যেমে পাঠানো হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্পের ৩য় পর্যায়ে সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা বিতরণের গত ১৩ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও নগদের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। শিগগিরই এ টাকা জিটুপি পদ্ধতিতে সরাসরি শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের কাছে পাঠানো হবে। নতুন নিয়মে উপবৃত্তির টাকা দিতে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহে একটি অনলাইন পোর্টাল খুলেছে ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’। ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষকরা তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ পাবেন।
যদিও শিক্ষকরা বলছেন, নগদের পোর্টালে শিক্ষকদের প্রথমবারের মতো শিশুদের উপবৃত্তি তথ্য আপলোড করতে হচ্ছে। শিক্ষকদের কিছু নতুন সিস্টেমে কাজ করতে হচ্ছে। ২৮ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষকদের তথ্য এন্ট্রি করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত অনেক শিক্ষকই উপবৃত্তি আপলোড করতে পারেনি। নতুন পদ্ধতির কারণে অনেকেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে তথ্য আপলোড করতে পারবেন না। শিশুদের জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ইউনিয়ন অফিস থেকে ৫ থেকে ৭ দিনের আগে জন্মনিবন্ধন সনদ দিচ্ছে না। উপবৃত্তির তথ্য আপলোড করার জন্য আরও কমপক্ষে এক সপ্তাহ সময় বাড়ানো হোক।
জানা গেছে, নগদের উপবৃত্তি পোর্টালে দেশের সব প্রকল্পভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক সব ডাটা লাইভ এন্ট্রি করবেন এবং উপবৃত্তির টাকা সুবিধাভোগীদের মাঝে জিটুপি সিস্টেমে দেয়া হবে। তথ্য অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী অভিভাবকদের যে মোবাইল নম্বর উপবৃত্তির টাকা দেয়ার জন্য পোর্টালে এন্ট্রি করবেন ,তা অবশ্যই তার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে নিবন্ধিত হতে হবে। শিক্ষার্থীদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে প্রধান শিক্ষকদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
নগদের পোর্টালে (pesp.mynagad.com.bd/login) তথ্য অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের ইএমআইএস কোডকে ইউসার আইডি হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। আর পাসওয়ার্ড উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে পাঠিয়েছে নগদ। প্রধান শিক্ষকরা পাসওয়ার্ড নিজের সুবিধা মত রিসেট করতে পারবেন ও গোপনীয়তা রক্ষা করবেন।
পোর্টালে শিক্ষার্থীদের মায়ের এনআইডি নম্বর ও সেই এনআইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা সিম ব্যবহার করতে হবে। যদি তা না থাকে সেক্ষেত্রে বৈধ অভিভাবকের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা যাবে। পোর্টালে যে মোবাইল নম্বর দেয়া হবে তা অবশ্যই সচল ও অভিভাবকের আয়ত্বে থাকতে হবে। বার্ষিক পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হবে।
নগদ পোর্টালে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩য় কিস্তিতে যেসব শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি দেয়া হয়েছিল তাদের তথ্য প্রদর্শিত হচ্ছে। এ ডাটাগুলো থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী সংযোজন, বিয়োজন ও পরিমার্জন করে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের উপবৃত্তির সুবিধাভোগীদের তালিকা ও ২০১৯-২০ অর্থবছরের ৪র্থ কিস্তির উপবৃত্তির টাকা বিতরণের উপযোগী চাহিদা পোর্টালে লাইভ এন্ট্রি আগামী ১০ জানুয়ারি মধ্যে শেষ করতে হবে। এ বিষয়ে একটি নির্দেশিকাও পোর্টালে দেয়া আছে। মাঠ পর্যায়ের সব কর্মকর্তারা পোর্টালে লাইভ এন্ট্রি সংক্রান্ত যেকোন জিজ্ঞেসায় ০৯৬০৯৬১৬১৬৭ নম্বর যোগাযোগ করতে পারবেন।
Discussion about this post