নিজস্ব প্রতিবেদক
ইচ্ছেমতো শিক্ষার্থীর বয়স কমানোর সুযোগ আর রাখছে না সরকার। প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির সময় জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিতে হবে। আর ওই জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী পাবলিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করা হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রতন চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে। তারা এটা বাস্তবায়ন করবে।’প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর বিভাগীয় উপপরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়। এর আগে গত ১২ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ভর্তির ক্ষেত্রে জন্ম-সনদ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকে নির্দেশনা দিয়েছিল। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছিল স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে গত বছর ১০ ডিসেম্বর একটি সভায় নীতিবহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থীর বয়স কমানোর প্রবণতা দূর করতে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওই সভার সিদ্ধান্তে জানানো হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ গ্রহণ, সংরক্ষণ ও পাবলিক পরীক্ষায় পাবলিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের সময় এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। নীতি বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থীর বয়স কমানোর প্রবণতা রোধকল্পে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন।
এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে গত গত ১২ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অধিদফতরকে নির্দেশনা দিয়েছিল। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর শিক্ষার্থীদের জন্ম সনদ সংগ্রহ ও সংরক্ষণে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়) থেকে এ নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের জন্ম-সনদ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়।
প্রকল্প পরিচালক মো. ইউসুফ আলী স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছিল, জন্ম নিবন্ধন রেজিস্টার জেনারেল জানিয়েছেন সারাদেশের ৪ হাজার ৫০০ ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৩ হাজারের বেশি ইউনিয়ন পরিষদের নিবন্ধন কার্যক্রম আপগ্রেড করা হয়েছে। যে সকল এলাকায় নিবন্ধন কার্যক্রমে সমস্যা হবে, সেখানকার উপজেলা শিক্ষা অফিসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করবেন। উপজেলা পর্যায়ে সমাধান না হলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ডিডিএলজি-এর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
আর কক্সবাজার জেলার রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম নেই। তবে ওই জেলার উপজেলাগুলোয় একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলার যে সকল স্থানে সমস্যা দেখা যাবে সেখানকার অভিভাবকদের সংশ্লিষ্ট উপজেলার টাস্কফোর্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে জন্ম-নিবন্ধন সংগ্রহ করবেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকের নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী মাধ্যমিকে ভর্তি এবং পাবলিক পরীক্ষার নিবন্ধন সম্পন্ন হবে। ফলে ইচ্ছেমত আর জন্ম তারিখ পরিবর্তন করা যাবে না।
Discussion about this post