নিজস্ব প্রতিবেদক
এ বছর করোনার কারণে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অটোপাস দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ওই পরীক্ষার মূল্যায়নের পর এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পরীক্ষার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মতো কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এখনো তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি।
এদিকে এইচএসসিতে অটোপাস দেওয়ার ফলে ন্যূনতম স্কোর করা সত্ত্বেও বিজ্ঞান বিভাগের বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এবার সবাই পাস করায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে সঙ্কটে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও। এখন কীভাবে অধিক সংখ্যক পরীক্ষার্থীকে সুযোগ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে পরিকল্পনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এবার এইচএসসিতে বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর জন্য নির্ধারিত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী। এইচএসসিতে শুধু বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ২৩ হাজার ৬৬৪ জন। এর বাইরে আরও অনেকে পরীক্ষা দিতে পারবেন। কিন্তু এত সংখ্যক পরীক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষা নেয়ার সক্ষমতা নেই ঢাবির।
সূত্র জানায়, এ বিষয়ে করনীয় ঠিক করতে সম্প্রতি বৈঠকে বসেন ‘ক’ ইউনিটের আওতাধীন বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা। সেখানে তারা সম্ভাব্য প্রাথমিক কিছু সিদ্ধান্ত নেন। এরমধ্যে রয়েছে, ভর্তি পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা অর্জন করা শিক্ষার্থীদের শুরুতে বিভাগীয় পর্যায়ে এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। সেখানে নির্দিষ্ট সংখ্যক উত্তীর্ণ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ডিন বলেন, ‘এবার সবাই পাস করায় তাদের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। তবে প্রথমে এমসিকিউ জাতীয় পরীক্ষা নিয়ে কিছু শিক্ষার্থীকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হতে পারে। এরপর ক্যাম্পাসে তাদের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার ক্যাপাসিটি আছে। সে অনুযায়ী, এ সংখ্যক শিক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় বসতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানের ডিনদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। তবে সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
গত বছর ৯টি শিক্ষাবোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে দুই লাখ ৬৮ হাজার ২৪৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছেন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ ২৩ হাজার ৬৬৪ জন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের এমসিকিউ (বহু নির্বাচনী), ৪০ নম্বরের লিখিত এবং এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ২০ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছিল।
Discussion about this post