শিক্ষার আলো ডেস্ক
তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি)। আজ শনিবার দুপুরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের দুই দফা দাবি মেনে নিলেও হল খোলার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। হলের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকেছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান জানান, ‘হল খোলার সিদ্ধান্ত আমাদের এখতিয়ারে নেই, এই সিদ্ধান্ত সরকারের। সরকার বললেই হল খুলে দেওয়া হবে।’
শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে আল বেরুনী হল, প্রীতিলতা হল, ফজিলাতুন্নেসা হল, বেগম খালেদা জিয়া হল, শেখ হাসিনা হল, নওয়াব ফয়জুন্নেছা হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের তালা ভেঙে ফেলেছেন।
শনিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত বিভিন্ন হলে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
এর আগে এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। এরপর সেখান থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।
সেখানে শিক্ষার্থীদের দুটি দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান।
জাবি শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো-আজ শনিবারের মধ্যে হল খুলে দিতে হবে, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খরচ ও মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ক্ষতিপূরণ প্রশাসনকে দিতে হবে এবং গেরুয়া এলাকার সঙ্গে ক্যাম্পাসের সংযোগ প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে এবং গতকাল রাতের সংঘর্ষের ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘গেরুয়াতে ছাত্র মরে, প্রশাসন কি করে’, ‘এক দফা এক দাবি, আজকেই হল খুলে দিবি’ স্লোগান দেন।
এলাকাবাসী বলছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের গেরুয়া বাজার এলাকায় সম্প্রতি বাতিঘর নামের একটি সংগঠন ক্রিকেট খেলার আয়োজন করে। সেই খেলায় একটি দলের পক্ষ থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী খেলতে যান। এ সময় ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে একদল সন্ত্রাসী লাঠি সোটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেই দিনেই বাতিঘরের অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে সেইসঙ্গে দুটি বিকাশের দোকানসহ তিনটি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় গেরুয়া বাজার এলাকায় নজরুল নামের এক যুবককে নিজ বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের ভাড়া ঘরে নিয়ে মারধর করে। পরে মারধরের বিষয়টি এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তাঁরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে জাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পরে। আহত সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, রাতের ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জাবি শিক্ষার্থী জানান, কয়েকদিন আগে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সঙ্গে জাবি শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়। সমস্যা সমাধানে শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে আলোচনা করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। আলোচনা চলাকালে আবার কথা কাটাকাটি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গেরুয়া বাজারের একটি ভবনে আটকে রাখা হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁদের মারধর করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মণ্ডল, কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যালেক্সসহ তিনজন আহত হন। এ সময় শিক্ষার্থীদের পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে স্থানীয়রা। রাতভর এলাকাবাসীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে জাবি শিক্ষার্থীদের।
Discussion about this post