নিজস্ব প্রতিবেদক
সব ধরনের বাধা পেরিয়ে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ১১ মাস পর গত পরশু সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষা শুরু হলেও শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পর আবারও ঝুলে গেছে চুয়েট শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা। গতকাল বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরীর দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে ২৪ মে পর্যন্ত চুয়েটে সব পরীক্ষা স্থগিতের কথা জানানো হয়।
রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত আরেক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থগিত পরীক্ষাসমূহের বিষয়ে আগামী মার্চের ২ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ৭০০ শিক্ষার্থী নিয়ে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। গতকাল শুধু পুরকৌশল বিভাগের পরীক্ষা থাকলেও মার্চ মাসে প্রায় প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। সাতশ শিক্ষার্থীর প্রায় সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে রাউজানের পাহাড়তলী, উনসত্তর পাড়া এবং শহরের বিভিন্ন মেসে অবস্থান করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পাঁচটি এবং ছাত্রীদের দুটিসহ মোট সাতটি হল থাকলেও করোনা পরিস্থিতির জন্য গত বছরের মার্চ থেকেই সেগুলো বন্ধ রয়েছে। এ বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি হল খোলা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র দাবি উঠলেও, হল না খুলে পরীক্ষা নিতে নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত বছর ৮ মার্চ সর্বশেষ ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগে বাধ্য হয়। ১৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। এতেই আটকে যায় ২০১৫-২০১৬ বর্ষের পাঁচ-ছয়টি বিষয়ের চুড়ান্ত পরীক্ষা।
করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলেও থেমে নেই চাকরির নিয়োগ কিংবা ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষা। যেহেতু চাকরি কিংবা বিসিএসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বাধ্যতামূলক, তাই পরীক্ষাগুলো যেন নেয়া হয় তার জন্য শিক্ষার্থীরা দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত জানালেও, পরে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এ বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে স্বশরীরে পরীক্ষা গ্রহণের নোটিশ দেয়। যার প্রথম পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয় ২২ ফেব্রুয়ারি।
কিন্তু পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষার্থীদের আবাসন সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা আগামী ২৪ মে’র পর অনুষ্ঠিত হবে এবং হলগুলো ১৭ মে খুলে দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন। ফলে আবারও ঝুলে গেল চুয়েটের চুড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীদের ৪-৫টি পরীক্ষা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়েট পুরকৌশল বিভাগের চুড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী আতাহার মাসুম তারিফ বলেন, সব ল্যাব কোর্সের পরীক্ষা শেষ হলেও মাত্র ৪-৫টি পরীক্ষার জন্য আমাদের জীবন থেকে একটা বছর হারিয়ে গেল। এমনটা কাম্য ছিলো না।
Discussion about this post