নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষার্থী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজস্ব খাত থেকে অনুদান হিসেবে ১১ কোটি টাকা অনুদান দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রতি বছর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও মেধাবী, অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী, জটিল ও ব্যয়বহুল রোগী, দুর্ঘটনাকবলিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা দেয়া হয়। তার ভিত্তিতে এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে বিভিন্ন ধাপে ৬ কোটি এবং কারিগরি ও মাদরাসা পর্যায়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের অনুদান প্রদানে অনুসরণীয় একটি নীতিমালা রয়েছে। বর্তমানে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া চলমান। আবেদন শেষে যাচাই-বাছাইয়ের পর যোগ্যদের ব্যাংক হিসাবে এ টাকা পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে এ সংক্রান্ত আলাদা দুটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতে একজন অতিরিক্ত বা যুগ্ম সচিব আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্যদের নির্বাচন করে।
জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় গত ১ ফেব্রুয়ারি এবং কারিগরিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় প্রায় ৯০ হাজার আর কারিগরি ও মাদরাসায় আবেদন জমা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। সার্ভার জটিলার কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় আবেদন সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ১৫ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে ৬ কোটি টাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুদান দেয়া হবে। তার মধ্যে এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১ লাখ, একজন শিক্ষক-কর্মচারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার, শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৮ হাজার, উচ্চ মাধ্যমিকে ৯ হাজার, স্নাতক/সমমান পর্যায়ে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
জানা গেছে, গত বছর ষষ্ঠ থেকে স্নাতক পর্যায়ের ৮ হাজার ১ হাজার ৮৬ জন শিক্ষার্থী, ৩০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সমপরিমাণ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ৬ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে এ বছর মাদসারা ও কারিগরিতে অনুদানের জন্য ৫ কোটি টাকার মধ্যে একক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার, একজন শিক্ষক-কর্মচারীকে ২০ হাজার, ইবতেদায়ী (১ম থেকে ৫ শ্রেণি) পর্যায়ের প্রতি শিক্ষার্থী ৩ হাজার, দাখিল/এসএসসি ভোকেশনাল পর্যায়ে প্রতিজন ৫ হাজার, আলিম/এইচএসসি (বিএম)/ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পর্যায়ের প্রতি শিক্ষার্থী ৬ হাজার এবং ফাজিল ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ে ৭ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে।
জানা গেছে, গত বছর এ বাবদ ৪ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ৫ হাজার ৯৫১ জন শিক্ষার্থী, ২৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৪০০ জন শিক্ষকের মাঝে এ অর্থ বিতরণ করা হয়।
এদিকে রোববার (৭ মার্চ) দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা সরকারি অনুদান দেয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং ইউটিউবে এমন ভুয়া তথ্য প্রচার করেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। আর তাদের এই গুজবে বিশ্বাস করে দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঢল নেমেছিল। ফটোকপি ও অনলাইন সার্ভিসের দোকানগুলোতেও ছিল উপচেপড়া ভিড়। এটা বন্ধে কয়েক দফায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় সতর্কবার্তা জারি করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, প্রতিবছর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত অনুদান দেয়া হয়ে থাকে। কারা এ টাকা পাবেন তার একটি নীতিমালা আছে। সে অনুযায়ী প্রতিবছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদান দেয়া হয়ে থাকে।
নীতিমালা অনুযায়ী একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন সংগ্রহ করে কমিটি যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের চূড়ান্ত করে তাদের কিছুটা আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
Discussion about this post