মো. সাইদুল ইসলাম চৌধুরী
সম্প্রতি সাদার্ন ইউনিভার্সিটিতে পুরকৌশল বিভাগের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের জলসম্পদ খাতের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জসমূহ’ বিষয়ক ওয়েবিনার অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী অধ্যাপক ড. হাসিনা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে রিসোর্স পারসন হিসেবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ।
ওয়েবিনারে ড.তানজির নদী সম্পর্কিত বিদ্যমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন বিষয়ে এবং প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণার পাশাপাশি লব্ধ ফলাফল বাস্তবে ব্যবহারের বিষয়ে যোগসূত্র স্থাপনে নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
নদী ভাঙনের কারণ ও উৎস অনুসন্ধান করতে গিয়ে ড.তানজির স্যাটেলাইট চিত্রের ব্যাপক ব্যবহার, মাঠ পর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ এবং গাণিতিক মডেলের ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যাখ্যা করেন। তার অধ্যয়নগুলো দেখায় যে, পলির আকার নদী প্রবাহের গতিপথের ওপর প্রভাব ফেলে। কারণ বড় নদীগুলোর বাংলাদেশ অংশে অনেক মিহিপলি পাওয়া যায়, যা নদী তীর ভাঙন এবং গতিপথ পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
আলোচক বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পর এর উজান ও ভাটিতে ব্যাপক পলিপতন, চরগঠন, নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও সর্বোপরি যমুনা নদীর ওপর যমুনা সেতু নির্মাণের প্রভাব দেখিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মিঠা পানির একমাত্র উৎস হিসেবে গড়াই নদীকে চিহ্নিত করেন এবং গড়াই নদীর উৎসমুখে পলি পতন হয়ে নদীর প্রবাহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি আলোচনা করেন। এছাড়াও আলোচক পদ্মা বহুমুখি সেতু বাস্তবায়নের পর নদীর চরিত্র পরিবর্তন হতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন।
ড. তানজির আলোচনায় নদীর ভাঙ্গন বাড়ার সাথে সাথে যাবতীয় সমস্যার প্রতিরোধের ওপর জোর দেন। একটি টেমপ্লেট হিসেবে তিনি কক্সবাজারের বিচ ক্ষয়ের জিও টিউব, জিও টেক্সটাইলস, ব্যাংক লাইন শিফটিংয়ের বিষয়ে কথা বলেন। তিনি এডিবি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, জাইকা এবং অন্যান্য দাতা সংস্থাসমূহের অর্থায়নে গ্রহণ করা মেগাপ্রকল্পগুলো এবং ভবিষ্যতে কাজ করার সুযোগ নিয়েও আলোচনা করেন।
ড. তানজিরের আলোচনা শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে একটি আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
Discussion about this post