নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসে। পরবর্তীতে লকডাউন সীমিত হয়ে অফিস আদালত খুলে দেওয়া হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়তে থাকে।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার তারিখ অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা হলেও পরবর্তীতে সেটি বাস্তবায়ন হয়নি।
সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা বলা হলেও নির্দিষ্ট হয়নি দিনক্ষণ। ফলে শিক্ষার্থীরা নানা বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় পড়েছেন।
হঠাৎ করে বৈশ্বিক অতিমারিতে পড়ায় শিক্ষার্থীদের জীবন আচারণেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ঢাকায় শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে অর্থ উপার্জন করতেন। অনেকে সেই অর্থ পরিবারের কাছে পাঠাতেন।
কিন্তু করোনায় সব বন্ধ হওয়ায় গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা। সেখানে অনেকে অর্থ উপার্জনের উৎস খুঁজে বের করেন। আবার অনেকে কিছু করতে না পেরে লকডাউন শিথিল হলে ঢাকায় এসে বাসা ভাড়া নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করেন। অনেকে উদ্যোক্তা হন। ব্যবসার পরিধি বাড়ান। অনেকে অস্থায়ী চাকরি করছেন।
তবে আবাসিক হল খোলার সঙ্গে তাদের সকল কার্যক্রম নির্ভর করছে। নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না করায় বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, যদি সত্যিই অক্টোবরের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলার পরিকল্পনা থাকে, তবে অক্টোবরের শুরুতে নয়, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ কিংবা তার পূর্বেই হল খুলে দেয়া উচিত। পাশাপাশি হল খোলার তারিখ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট ঘোষণাটি আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই জানানো জরুরি। তাহলে ঢাকা কিংবা মফস্বল শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে থাকা শিক্ষার্থীরা বাড়ির মালিকদেরকে আগামী মাস থেকে ভাড়া না থাকার ব্যাপারে জানিয়ে দিতে পারবে।
সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখের পূর্বে হল খোলার নির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে দিলে এবং সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের পূর্বে হল খুলে দিলে অনেক শিক্ষার্থীর এক মাসের বাসা ভাড়া নষ্ট হবে না। এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি অনেক বড় অনুগ্রহ হবে বলেও জানান ওই শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পর্বের একজন ছাত্র বলেন, এই বন্ধে অনেকে অনলাইনে অনেক পরিশ্রম করে ক্ষুদ্র বিজনেস দাড় করিয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলে সেসব চালু রাখার জন্য নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে। কিন্তু অনির্দিষ্ট তারিখে সেব সম্ভব হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, হল খোলার সঙ্গে কয়েকটি বিষয় জড়িত। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য খোলা হবে ধাপে ধাপে। নির্দিষ্ঠ তারিখ ঘোষণার বিষয়ে পরবর্তী সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আর এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রথম আবাসিক হল খোলার জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। আমরা সে অনুযায়ী আগাব। ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণের তথ্য ও পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Discussion about this post