নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা মহামারীতে দীর্ঘ একযুগ পর সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল আবারও খুলছে।
কোভিড পরিস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণের তথ্য পর্যালোচনা করে ১৫ সেপ্টেম্বরের পর হল খোলার সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার জন্য আবার সভায় বসবে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি।
দীর্ঘ সময় হল বন্ধ থাকায় ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের ওঠিয়ে অনিয়মিত ও ছাত্রত্ব শেষ শিক্ষার্থীদের কক্ষে বর্তমান শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দিয়ে আবাসন নিশ্চিত করার সুযোগ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিবরণীতে দেখা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৯টি হল ও ৪টি হোস্টেল মিলিয়ে আবাসন সুবিধা রয়েছে মাত্র ১৬ হাজার ৭২৩ জনের। কিন্তু রাজনৈতিকভাব প্রভাব দেখিয়ে কক্ষ দখলে রাখা ও (সাধারণ) ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের সিট না ছাড়ায় নিয়মিত শিক্ষার্থীরা আবাসন সুবিধা বঞ্চিত থাকছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে শিক্ষার্থীদের বৈধভাবে প্রশাসন বরাদ্দ দেয় শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিবেচনায়। সেখানে প্রাধান্য পান ফাইনাল ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা। সঙ্গত কারণে প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিকভাবে গণরুমে (এক কক্ষে গাদাগাদি করে অধিক শিক্ষার্থীর বসবাস) অবস্থান নেয় এবং তাদের ছাত্রসংগঠনগুলোর কর্মসূচিতে নিয়মিত উপস্থিত হতে হয়। পরবর্তীতে তাদের বড় একটি অংশ রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে চাকরির পড়াশোনায় মনোযোগী হয় এবং চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত দীর্ঘ সময় হলে অবস্থান করার একটা প্রবণতা তৈরি হয়। একদিকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি অপরদিকে কক্ষ না ছাড়ায় আবাসন সংকট প্রকট আকার ধারণ করে।
করোনার কারণে এবার পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীরা হল বন্ধ থাকায় অনেকে মেস বা বাসা নিয়েছেন। অনেকে চাকরিতে ঢুকেছেন। নতুন করে হল খুলে দিলে তাদের হলে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে ওঠবে প্রশাসনের কারণে। অন্যদিকে পরিবেশ সংসদের সভায় ছাত্রসংগঠনগুলো গণরুম বিলুপ্তিতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ফলে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন নিশ্চিতের সুযোগ পাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে সহকারি প্রক্টর ড. আবদুর রহিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরিকল্পনা রয়েছে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের হলে ওঠানোর জন্য। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদেরও সহযোগিতা করতে হবে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় মূল্যবোধ চর্চার জায়গা। শিক্ষার্থীরাও যেন নৈতিক জায়গা থেকে ছাত্রত্ব শেষে হলে কক্ষ ছেড়ে দেয়।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলভিত্তিক ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করেছে। সে অনুযায়ী গণরুমগুলোতে চৌকি বসানো হচ্ছে।
Discussion about this post