শিক্ষার আলো ডেস্ক
দীর্ঘ ১৮ মাস পর অক্টোবর থেকে ধাপে ধাপে সচল হতে যাচ্ছে দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) শর্ত পূরণ করে ‘ফল সেমিস্টার’ থেকে সশরীরে ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু করতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দিন নির্ধারণ করেছে বলে সূত্রমতে জানা গেছে।
আগামী ৭ অক্টোবর থেকে রাজধানীর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক তারা ক্লাসে পাঠদান শুরু করার প্রস্তুতি শুরু করেছে। তবে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হলেও অনলাইনে নিয়মিত ক্লাসও করানো হবে।
এ বিষয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) বলেন, আগামী ৭ অক্টোবর থেকে আমাদের ফল সেমিস্টারের পাঠদান শ্রেণিকক্ষে শুরু করা হবে। একাডেমিক কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ৯৫ শতাংশ করোনা টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন। শিক্ষার্থীদেরও অধিকাংশ টিকার আওতায় এসেছে। তবে যারা এখনো টিকা পাননি তারাও ইউজিসির দেওয়া লিংকে প্রবেশ করে রেজিস্ট্রেশন করেছে।
এদিকে আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. মোশারফ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কবে থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু করা হবে সে সিদ্ধান্ত নিতে চলতি সপ্তাহে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা রয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরুর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, দেশে ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটির পাঠদান এখানো শুরু হয়নি। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় সচল রয়েছে তারা আগামী অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ ও দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ক্লাস শরু করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে টিকার আওতায় আনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্যাম্পাসে পাঠদান করানো সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, সবার টিকা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেটি নিশ্চিত করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্যাম্পাসে পাঠদান পরিচালনা করা হবে। যদি কারও উদাসীনতার কারণে কেউ করোনায় আক্রান্ত হন তবে তার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
তিনি বলেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা যাতে সহজে টিকা পান আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি। যেসব শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদের জন্মনিবন্ধন নম্বর দিয়ে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমরা আশা করি এরপর আর কেউ টিকার বাইরে থাকবে না। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
এদিকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ইউজিসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শর্তসাপেক্ষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তক্রমে নিজ ব্যবস্থাপনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে ক্লাস, পরীক্ষাসহ শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে পারবে।
শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে কমপক্ষে এক ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে অথবা ভ্যাকসিন গ্রহণের জাতীয় পরিচয়পত্র জাতীয় সুরক্ষা সেবা পোর্টালে অথবা সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে থাকলে;
২. ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব শিক্ষার্থী যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা জন্মনিবন্ধন সনদের ওয়েবলিংকে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য প্রাথমিক নিবন্ধন করে থাকলে এবং পরে জাতীয় সুরক্ষাসেবা ওয়েবপোর্টালে অথবা সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে টিকা গ্রহণের নিবন্ধন করে থাকলে ক্লাসে অংশ নিতে পারবে।
Discussion about this post