নিজস্ব প্রতিবেদক
সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বারান্দাসহ বেশ কয়েক জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নতুন শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই হলে এবার কোনো শিক্ষার্থীকে আসন বরাদ্দ দেওয়া হবে না।
পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমিয়ে এনে ঐতিহ্যবাহী এই আবাসিক হলটিকে ‘বিশেষায়িত হল’ হিসেবে ঘোষণা করার কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার ( ৩০ সেপ্টেম্বর ) বিকেলে হল পরিদর্শন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের এসব পরিকল্পনার কথা জানান।
এসময় পরিদর্শনকালে উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভুঁইয়াও উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ‘হলটি বড় আকারের ঝুঁঁকিতে আছে। আমরা শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি, এখানে নতুন করে আর শিক্ষার্থী দেব না। যারা থাকবে, তারা কেউ বারান্দায় থাকতে পারবে না, নির্ধারিত কক্ষেও ঠাসাঠাসি করে থাকতে পারবে না। হলটিকে দ্রুত হালকা করতে হবে। নচেৎ বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকবে।’
বিশেষজ্ঞ কমিটি হলটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ উল্লেখ করে রিপোর্ট দিয়েছে বলে জানিয়ে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিলাম। সেই প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। হল পরিদর্শন শেষে লক্ষ্য করলাম হলটি খুব ঝুঁঁকিতে আছে। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য আমাদের সকল ধরনের প্রয়াস থাকবে।’
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমান বলেন,‘আবাসন সংকট ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় এবছর সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে কোনো শিক্ষার্থীকে অ্যালটমেন্ট দেওয়া হবে না। কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের যাতে বারান্দায় না রাখা হয়, সে বিষয়ে উপাচার্য নির্দেশনা দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘এটা একটা ঐতিহ্যবাহী হল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই হলে অ্যালটমেন্ট পেয়েছিলেন। হলটি ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে বিশেষায়িত করার কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয়।’
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে হল বন্ধ থাকাকালে সম্প্রতি হলের বারান্দাসহ একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ায় তা পর্যবেক্ষণে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন প্রকৌশলী ও বুয়েটের তিনজন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। এছাড়া ফাটল দেখা দেওয়ায় আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে বারান্দা থেকে খাট, বিছানাসহ ভারী জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ।
Discussion about this post