শিক্ষার আলো ডেস্ক
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ (রবি) শিক্ষার্থীরা। অবরুদ্ধ প্রশাসনিক ভবন খুলে দিলেও একাডেমিক ভবনে অবস্থান করছেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র শামীম হোসেন বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। তিনি আমাদের অভিযোগের কথা শুনেছেন। আমরা কেন আন্দোলন করছি তা জানতে চেয়েছেন। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, তোমাদের প্রতি যেটা করা হয়েছে সেটা অন্যায়। তদন্ত সাপেক্ষে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রীর কথায় আশ্বস্ত হয়ে প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দিয়েছি। তবে আমরা একাডেমিক ভবনে অবস্থান করছি। সোমবার তদন্ত শেষ হবে। তদন্তের রিপোর্ট পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করবো। তদন্তে যদি আমাদের ওপর ন্যায় বিচার করা হয়, তবেই আন্দোলন থেকে বের হবো আমরা। না হলে সোমবার থেকে আবারও আন্দোলন শুরু হবে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব হোসেন বলেন, আন্দোলনত শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে আমাদের প্রশাসনিক ভবন খুলে দিয়েছে। আমরা আমাদের প্রশাসনিক কাজকর্ম ইতোমধ্যে শুরু করেছি। তবে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান করছে বলে জানান তিনি।
গত রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন। অপমান সহ্য করতে না পেরে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নাজমুল হাসান তুহিন এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সকল পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনে তাল ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করে। ওইদিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। ঘটনার তদন্তে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
তারপরও ওই শিক্ষিকার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে আমরণ অনশন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। অবশেষে এ অচলাবস্থা নিরসনে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে সিন্ডিকেট মিটিং শেষে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘোষণা করা হয়। এরপরও প্রশাসনিক ভবনে ভিসিসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে আন্দোলন চালিয়ে যায় শিক্ষকার্থীরা। শনিবার দুপুরে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে অবরুদ্ধ প্রশাসনিক ভবন খুলে দেন তারা।
Discussion about this post