শিক্ষার আলো ডেস্ক
২০২২ সাল থেকে নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষাদান কর্মসূচী শুরু হবে এবং এজন্য পরীক্ষামূলক ফ্রেমওয়ার্কও তৈরি করেছে জাতীয় শিক্ষাবোর্ড।
তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের দীর্ঘদিনের আন্দোলন এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রাজবাড়ীর রূপান্তরিত নারী তানিশা ইয়াসমিন চৈতি, পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সেই পরিচয়েই পড়ালেখা করেন।
কিন্তু এরপর রুপান্তরিত হলে বিপত্তি ঘটে, সার্টিফিকেটে নাম পরিবর্তন করতে গিয়ে।
তিনি বলেন, এইচএসসির পর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অনেক দৌড়াদৌড়ি করেও কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্তও তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে সার্টিফিকেটে তার নাম পরিবর্তন করা যায়নি। যে কারণে পরবর্তী পড়াশোনায় অংশ নিতে পারেন নি তিনি।
এর জন্য নির্দিষ্ট কোনও ব্যবস্থা নেই বলেও তাকে জানিয়েছিল শিক্ষাবোর্ড।
তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি একজন মানুষ ছেলে হিসেবে শিক্ষাজীবন শুরু করে এবং এক পর্যায়ে নিজের পরিচয় নারীতে পরিবর্তন করতে চায় তাহলে সেটার সুব্যবস্থা থাকা দরকার।
হিজড়াদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী সংগঠন ‘সম্পর্কের নয়া সেতু’র সভাপতি জয়া শিকদার বলেন, “১৮ বছর বয়সের পর যদি কেউ মনে করে আমার শরীর পুরুষের কিন্তু আমি নারী। সে নারীর পোশাক পরতে পারে, সার্জারির মাধ্যমে নারী থেকে পুরুষ বা পুরুষ থেকে নারী হতে পারে। কিংবা কিছু নাও করতে পারে। বিষয়টা পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক।”
এছাড়া বলেন, সরকারি সব নথিতে নিজের পছন্দের পরিচয় নির্বাচনের সুযোগ থাকতে হবে, তাহলেই একজন মানুষ, সে যেই লিঙ্গেরই হোক না কেন, রাষ্ট্রের সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
এই সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ড তাদের শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনে।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সময় সবার মত তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিরাও নিজের পরিচয় ব্যবহার করেই ভর্তি হতে পারবেন।
সরকার ২০১৩ সালে হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দেয়। পরে ২০১৯ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রে তৃতীয় লিঙ্গের পরিচয়ের ভোটাধিকার পান তারা।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
Discussion about this post