নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের সরকারি সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে এবার নিয়মিত ডিম, দুধ, কলা, মৌসুমি ফল ও মাঝে মাঝে রান্না করা খাবার দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে বিদ্যালয়ের ‘মিড ডে মিল’র আইটেম নির্ধারণ করা হবে। চলতি মাসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাবনা (ডিপিপি) একনেকে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর)বলেন, মিড ডে মিল প্রকল্পের আন্তঃমন্ত্রণালয়ের দুটি সভা শেষ হয়েছে। এখন পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিপিপি চূড়ান্ত করা হবে। চলতি মাসের মধ্যে এ প্রস্তাব একনেকে পাঠানো হবে। বর্তমানে স্কুল ফিডিং প্রকল্পের ছয় মাস সময় বাড়ানো হয়েছে। তার মাধ্যমে নির্ধারিত বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পুষ্টিসম্মত বিস্কুট বিতরণ করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, গত সপ্তাহের রোববার (৩ অক্টোবর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিড ডে মিলের খাবারের আইটেম কী হতে পারে সে বিষয়ে মতামত নেওয়া হয়েছে। তবে কোন পদ্ধতিতে তা বাস্তবায়ন করা হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সেখানে সংশ্লিষ্টরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরতির সময়ে সিদ্ধ ডিম, দুধ, মৌসুমি ফল ও মাঝে মাঝে রান্না করা খিচুড়ি বা অন্য কোনো খাবার দেওয়ার প্রস্তাব করেন। তার ভিত্তিতে মিড ডে মিল প্রকল্পের নতুন ডিপিপি তৈরি করা হচ্ছে। পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে টিফিনের আইটেম নির্ধারণ করা হবে।
প্রকল্পটি প্রথম দফায় ২০১০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়। পরে প্রকল্প সংশোধন করে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ১৪২ কোটি ৭৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারের ৫৯৭ কোটি ৭০ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ও প্রকল্প সাহায্য ৫৪৫ কোটি ৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। বর্তমানে এ প্রকল্পের ৪৬৯ কোটি টাকা অব্যয়িত রয়েছে।
এদিকে, চলতি বছরের জুলাইয়ে এসে এ প্রকল্পের মেয়াদ আরও ছয়মাস বাড়ানো হয়। তবে মেয়াদ বাড়লেও প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে না। প্রকল্পের উদ্বৃত্ত টাকা দিয়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাথমিকের ৩০ লাখ শিক্ষার্থীদের উচ্চ পুষ্টিমানের বিস্কুট বিতরণ করা হবে। এ ছয় মাসের মধ্যে নতুন একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে দেওয়ার শর্তে এ মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে নাকি মায়েদের আনতে বলা হবে, সরকার দিলেও কোন পদ্ধতিতে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আরেকটি সভা করে এসব বিষয় চূড়ান্ত করে নতুন প্রস্তাবনা তৈরি করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের কি ধরনের খাবার দেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে আমরা নানা ধরনের প্রস্তাব পেয়েছি। পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে সেসব চূড়ান্ত করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কী পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন হতে পারে সেটি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সব কিছু চূড়ান্ত করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন হলে পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
Discussion about this post