নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী বছর থেকে অর্থাৎ ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিক পরিচিতি নম্বর তৈরির চিঠিতে দুই সেমিস্টারে ভর্তির শর্ত জুড়ে দিয়েছে ইউজিসি।এতদিন ধরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন সেমিস্টারে ভর্তি হয়েছে শিক্ষার্থীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন কোর্স খোলার ক্ষেত্রে কোনও আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ দুই সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তির শর্ত ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘ইউনিক স্টুডেন্ট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর’ তৈরির চিঠিতে। যদিও নতুন কোর্স খোলার ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে কিনা তা চিঠিতে উল্লেখ নেই। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে স্বাভাবিকভাবে তিন সেমিস্টার চালু আছে, কোথাও চার সেমিস্টারও চালু আছে। সেখানে একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ক চিঠিতে অন্য একটি বিষয় যুক্ত করে বলা হলো, ‘২০২১ সালের পর দুই সেমিস্টার ছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তি হলে কমিশনের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।’
জানা গেছে, শিক্ষাক্রম পরিচালনার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। আলোচনা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের মন্তব্য, ‘কোনও সিদ্ধান্ত জোর করে চাপিয়ে দিয়ে মানসম্মত শিক্ষা অর্জন সম্ভব হয় না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যলয়গুলোর ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য নতুনভাবে অপকৌশল শুরু করেছে ইউজিসি।’
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা বলছেন, ‘দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অ্যকাডেমিক বিষয় অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। দুই সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তির শর্তারোপ আইনের ব্যত্যয়, যা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর অযথা চাপ সৃষ্টির জন্য করা হয়েছে।’
শিক্ষার্থী পরিচিতি নম্বর তৈরির চিঠির একাংশে লেখা হয়েছে, ‘যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে তিন সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছিল সেগুলোতে দুই সেমিস্টার ছাড়া কোনও সেমিস্টার থাকলে সেটির কোড হবে ৩। তবে কোনোক্রমেই ২০২১ সালের পর বছরে দুই সেমিস্টার ছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তি কমিশনের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।’
ইউজিসি’র নতুন শর্ত জুড়ে দেওয়ার বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন তার মন্তব্যে বলেন, ‘যারা নতুন বিষয় খুলতে চাচ্ছে তাদের এই শর্ত দিয়ে দিচ্ছে, যা আইনের মধ্যে পড়ে না। এ নিয়ে আমরা কথা বলবো।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘দুই সেমিস্টারে ভর্তি করানোর পর কোনও শিক্ষার্থী যদি অকৃতকার্য হয় বা সেমিস্টার চালিয়ে নিতে ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে তখন ওই শিক্ষার্থী তিন সেমিস্টারে ভর্তি হবে।’
Discussion about this post