শিক্ষার আলো ডেস্ক
গান, নাটক ও কবিতায় সারা দেশে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রাচ্যনাট।
শনিবার (৩০ অক্টোবর) বিকাল তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত “পথ ছেড়ো না পথের মানুষ” আহ্বানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের বটতলায় এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
কাজী রোকসানা রুমার পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় এ সময় পরিবেশন করা হয় নাটক ‘তুমিই বাংলাদেশ’। থিয়েটার বায়ান্ন পরিবেশন করে সুরভী রায় রচিত নাটক ‘মিছিলের গান’। মুক্তনীলের রচনা ও নির্দেশনায় বাতিঘর পরিবেশন করে ‘গুজব আসছে’ নাটক।
অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন আশরাফুল আলম ও শিমুল মোস্তফা। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইম অ্যাকশন সোসাইটি, বৈকুণ্ঠ, স্রোতসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল পথনাটক, পারফরম্যান্স আর্ট, ইন্সটলেশন আর্ট এবং সম্প্রীতির গান পরিবেশন করে।
নাট্যকার ও নির্দেশক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সংখ্যালঘু শব্দটার মধ্যেই এক ধরনের বৈষম্য লুকিয়ে আছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন এই ধারণা পোষণ করে যে, যারা সংখ্যায় কম তাদেরকে চাইলেই আক্রমণ করা যায়। আমাদের দেশে সম্প্রতি যারা সংখ্যায় কম, তাদেরকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। এটা এক ধরনের হীনমন্যতা।
তিনি বলেন, বর্তমানে সাম্প্রদায়িকতা আরও বেড়েছে। মানুষ ভদ্রতার খাতিরে অসাম্প্রদায়িকতার ভাব ধরে আছে, কিন্তু তাদের মনে আছে সাম্প্রদায়িকতা। এ অবস্থায় আমাদের বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়া জরুরি।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে নাট্যকার ও গবেষক রতন সিদ্দিকী বলেন, আমরা এখন যদি প্রতিবাদ না করি, প্রতিরোধ গড়ে না তুলি তাহলে আমাদের সামনে অনেক বিপদ।
নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, আগে গ্রাম-বাংলায় জারি, সারি, কবিগান, পালা গান অনেক হতো, সাংস্কৃতিক কর্মীদের কর্মযজ্ঞ হতো, গত কয়েক বছরে তা ম্লান হয়ে গেছে। এই সুযোগে সাম্প্রদায়িক শক্তি নেমে পড়েছে। আমাদের হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির জাগরণ সৃষ্টি করতে পারলে এই বিপর্যয়কে আমরা রোধ করতে পারব।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে ‘অন্ধকার আর অসুরের বিনাশে ছড়াই আলো আর সুরের রশ্মি’ স্লোগানে বটতলা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিচিরন্তন চত্বর পর্যন্ত একটি আলোর মিছিল করা হয়।
Discussion about this post