নিজস্ব প্রতিবেদক
জন্মনিবন্ধন কার্ড ব্যবহার করে টিকা কর্মসূচির আওতায় আসবে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা। আর টিকা নেওয়ার জন্য তাদের টিকা কার্ড এবং জন্মনিবন্ধন নিয়ে টিকা কেন্দ্রে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠিত ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য ডা. শামসুল হক।
রবিবার ( ৩১ অক্টোবর) কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. শামসুল হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, যেহেতু এই শিশুদের এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) নেই, তারা বার্থ রেজিস্ট্রেশন বা জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে এ তালিকায় (টিকাদান কর্মসূচি) অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে।
প্রসঙ্গত, আগামীকাল (১ নভেম্বর) দেশে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে। তবে প্রথমে রাজধানীর ১২টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার কথা জানানো হলেও পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় চারটি বাতিল করা হয়েছে। ফলে আগামীকাল থেকে ৮টি কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন শামসুল হক।
সকাল সাড়ে নয়টায় এ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
ডা. শামসুল হক বলেন, এই কার্যক্রমে এমন স্কুলগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে যেখানে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ছাড়াও তার আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে পারবে।
তিনি বলেন, যে আটটি কেন্দ্রে নির্বাচন করা হয়েছে সেখানে তারা নিজেদের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আশপাশের নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে পারবেন। ফাইজার ভ্যাসকিনটি তাপমাত্রা সংবেদনশীল। যে কেন্দ্র, যে বুথে এই টিকা দিতে হয় সেটা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হতে হয়। এই ভ্যাকসিন তৈরি করা জন্য যে ডায়লুয়েন্ট লাগে সেটা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় বিবেচনা করে যেখানে আমাদের এই সুযোগ আছে সেই স্কুলগুলো নির্বাচন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ২৫টি বুথ করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, প্রতিদিন যেন ৪ থেকে ৫ হাজার শিশুকে টিকা দিতে পারি।
এ উদ্দেশ্যে আমরা অনেক স্কুলের তালিকা চেয়েছিলাম, কিন্তু মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর প্রাথমিকভাবে ২৫টি করে বুথ করা যায়, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাপনা রয়েছে, এমন মোট আটটি স্কুলের তালিকা দিয়েছে। তবে পরবর্তীতে ঢাকা শহরসহ আরও প্রায় ২২টি জেলায় শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে প্রতিটি জেলায় এই কর্মসূচি সম্প্রসারিত করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
ডা. শামসুল হক বলেন, যেহেতু তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাই জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে তারা নিবন্ধনের আওতায় আসবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জন্মনিবন্ধনের তালিকা আইসিটি বিভাগকে পাঠাবে। আইসিটি বিভাগ হোয়াইট লিস্টিং করে, সঠিক করে দেখে আমাদের সুরক্ষা ওয়েবসাইটে দিয়ে দেবে। তখন প্রতিটি অভিভাবক অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ সুরক্ষার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করবে।
আর শিশুটি যেদিন টিকা নেবে সেদিন তার নিবন্ধন কার্ড এবং জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি নিয়ে স্কুলে আসতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোনও টিকা দেওয়া হবে না। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টিকা নিলে আমরা তাদের সার্টিফিকেট দিতে পারবো না।
তবে এখানে স্কুলও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে জানিয়ে তিনি বলেন, স্কুলে যখন টিকা কার্যক্রম চলবে তখন সেখানে টিকাদানকারীসহ প্রতিটি স্কুলে ডাক্তার থাকবেন। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে সবাইকে স্কুলে ভিড় না করার অনুরোধ করেছেন ডা. শামসুল হক।
Discussion about this post