শিক্ষার আলো ডেস্ক
‘সান্ধ্য আইন’ (সন্ধ্যার পর হলে প্রবেশের নিয়ম) বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের ছাত্রীরা। শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হলের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
ছাত্রীদের অভিযোগ, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের আগে ছাত্রীরা রাত ১০টা পর্যন্ত হলে প্রবেশ করতে পারতেন। কিন্তু নতুন প্রত্যক্ষ দায়িত্ব নিয়ে সন্ধ্যা ৭টার পর হলে প্রবেশের নিয়ম চালু করেছেন। এ অবস্থায় ছাত্রীরা নির্ধারিত সময়ের পরে হলে প্রবেশ করতে চাইলে নানাভাবে হেনস্থার শিকার হন।
ছাত্রীরা জানান, হল প্রশাসন সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাদেরকে ডাইনিংয়ে খেতে বাধ্য করেছে। অন্যথায় তাদের সিট বাতিল করা হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু হলের ডাইনিং-ক্যান্টিনের খাবার নিম্নমানের। ক্যান্টিনের কর্মচারীরা ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। যেসব ছাত্রী পর্দা করে চলেন তারা ডাইনিংয়ে খাওয়ার পরিবর্তে নিজের রুমে খেতে চাইলে কর্মচারীরা তাদের হাত থেকে প্লেট কেড়ে নেয়।
ছাত্রীরা আরও জানায়, শুক্রবার বিকেলে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে টিভি রুমে মিটিংয়ে বসেন হল প্রাধ্যক্ষ ফেরদৌসী মহল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করে তিনি সেখান থেকে চলে যান। এরপরই হল থেকে বেরিয়ে আন্দোলন শুরু করে হলটির ছাত্রীরা।
পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় আন্দোলনরত ছাত্রীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠকে বসে। বৈঠক শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছাত্রীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর লিয়াকত আলী। এরপর আন্দোলন স্থগিত করেন ছাত্রীরা।
ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর লিয়াকত আলী বলেন, হলের ডাইনিংয়ে খাওয়ার আর কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। তারা নিজেরা রান্না করতে পারবে। এছাড়া সন্ধ্যা ৭টার পর ছাত্রীদের বিভিন্ন কাজে হলের বাইরে যেতে বা প্রবেশ করতে কোনো বাধা থাকবে না।
এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল বলেন, দীর্ঘদিন হল বন্ধ থাকায় ইলেক্ট্রিসিটির লাইনসহ অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। হলে গণরুমে ৪০ জনের রান্নার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু সেখানে ১৪০ জন রান্না করছে। এ অবস্থায় রান্না করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় আশঙ্কায় গণরুমে রান্না বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। হলের ডাইনিংয়ে খাবার মানসম্মত ও দাম কম। আমি নিজেই খেয়ে দেখেছি।
সান্ধ্য আইনের বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে সন্ধ্যা ৭টার পর হলে প্রবেশের নিয়ম চালু করা হয়। ছাত্রীদের কল্যাণে এটি করা হয়।
Discussion about this post