আড্ডার ছলে রোবোটিক্স এবং প্রযুক্তির শিক্ষাকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে একদল তরুণ। আনন্দের সাথে প্রযুক্তিগত শিক্ষাকে সকল শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতিই এ অভিনব পন্থা বেছে নিয়েছে রোবোটিক্স সংগঠন ‘রোবো আড্ডা’।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রযুক্তিগত জ্ঞান পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্য এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ‘রোবো আড্ডা’। যেখান থেকে আগ্রহীদের ইনোভেশনে কাজ করার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
আড্ডার ছলে রোবোটিক্স শেখাতেই এই ‘রোবো আড্ডা’র প্লাটফর্ম তৈরি বলে ঢাকা পোস্ট প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপকালে জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং রোবো আড্ডা’র ফাউন্ডার ও সিইও মিনহাজুল আবেদীন।
সংগঠনটির কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে মিনহাজুল আবেদীন বলেন, দেশের সব প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেকনোলজির শিক্ষা সহজ করাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশেই সংগঠনটি তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই প্লাটফর্মে আমরা শিক্ষার্থীদের রোবোটিক্সের পাশাপাশি প্রোগ্রামিং, অটোক্যাড ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, পিসিবি ডিজাইন, ওয়েব আর এপ ডেভেলপমেন্টসহ খুব সহজেই বাংলা ভাষায় বিভিন্ন প্রযুক্তিগত বিষয়ে শিক্ষা দিতে কাজ করে যাচ্ছি। এ ছাড়াও টেকনোলজির বিভিন্ন নতুন দিক উদ্ভাবনেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কয়েকটি ফ্রি ক্লাসও পরিচালনা করছি। আমাদের ওয়েবসাইটের (https://roboadda.com.bd) মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আমাদের সংগঠনের সম্পর্কে সকল তথ্য এবং আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারবে।
তিনি বলেন, এ ছাড়াও আমাদের ফেসবুক পেজের (https://www.facebook.com/roboaddabd) মাধ্যমেও শিক্ষার্থীরা আমাদের সকল কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকতে পারবে।
সংগঠনে সারাদেশ থেকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও শিক্ষার্থীরা রোবোটিক্স এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী, কিন্তু তারা পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে এসব প্রযুক্তিগত শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করেছি সেসব অঞ্চলে আমাদের সংগঠনকে পৌঁছে দেওয়ার। আমাদের সংগঠনটি তার কার্যক্রম শুরুর মাত্র দেড় বছরেই অনলাইন কার্যক্রমের মাধ্যমে সারাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দশ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী যুক্ত হয়েছে এ সংগঠনটিতে।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা হিসেবে আছেন শাবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনিম বিনতে শওকত।
সংগঠনটি পরিচালনার ক্ষেত্রে কী কী প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চাই সংঠনটি রোবোটিক্সের প্রতি আগ্রহী বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে যাক। সেজন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে সংগঠনটি পরিচালনার ক্ষেত্রে একমাত্র প্রতিবন্ধকতা হলো অর্থনৈতিক সমস্যা। রোবো আড্ডা’র কাজ এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় অর্থের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট টিমের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাব এবং কম্পোনেন্ট ম্যানেজ খুব কঠিন কাজ।
পাঁচ বছর পর রোবো আড্ডাকে কোথায় দেখতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেড় বছরের পথচলায় সবচেয়ে বড় সফলতা হলো, আমরা আমাদের সংগঠনকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পৌঁছাতে পেরেছি। তারাও এই সংগঠনটির কার্যক্রমের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। তবে সকল প্রতিকূলতা ছাপিয়ে আগামী পাঁচ বছর পর রোবো আড্ডাকে বাংলাদেশের একটি অন্যতম রোবোটিক্স সংগঠন হিসেবেই দেখতে চাইবো। আমরা আশা করি বাংলাদেশের পরবর্তী অ্যাডভান্স রোবট আমাদের ‘রোবো আড্ডা’র হাত ধরেই আসবে।
Discussion about this post