শিক্ষার আলো ডেস্ক
অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা করায় ২৫ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে শোকজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ভাড়া বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী ভর্তি-ক্লাস করানোর কারণে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, শোকজ দেওয়া ২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোটিকে তিনদিন আবার কোনোটিকে পাঁচদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। শোকজে যেসব প্রতিষ্ঠান স্থায়ী ক্যাম্পাসে গিয়ে আগের ঠিকানায় (অস্থায়ী) নানা নামে ক্যাম্পাস ধরে রেখেছে, সেগুলোর বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, আইন অমান্য করে যারা দিনের পর দিন অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের শোকজ করা হয়েছে। অনেকে স্থায়ী ক্যাম্পাস করে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে রয়ে গেছে। অনেকে আবার স্থানান্তার হয়নি। সেগুলোর কর্তৃপক্ষের কাছে বক্তব্য চাওয়া হয়েছে। এখন পরিস্থিতি এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রোফাইল পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘন এবং সনদ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ ও প্রমাণ থাকে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার মতো প্রস্তাব আসতে পারে।
তথ্যমতে, দেশে ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ৯৯টি। ১৯৯২ সালে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ শুরু হয়। ২০১০ সালের আগে ৫২টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। এরমধ্যে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ আদালতে মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে সরকার বন্ধ করে দেয়।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অবশিষ্ট ৫১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করেছে। বাকি ২৫ প্রতিষ্ঠানের কোনোটি আংশিক ক্যাম্পাস নির্মাণ করেছে। কিছু প্রতিষ্ঠান জমি কিনেছে। আবার কিছু কোনো ধরনেরই পদক্ষেপ নেয়নি।
স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ২০১০ সালের পর থেকে সরকার এসব প্রতিষ্ঠানকে কয়েক দফা আলটিমেটাম দিয়েছে। সর্বশেষ দেওয়া আলটিমেটামে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তখন বলা হয়েছিল, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এ নির্দেশ পালন করতে পারবে না তাদের ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকার কথা ছিল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এরমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পরিবর্তন আসে। বারবার আলটিমেটাম দেওয়ার পরও তা প্রতিপালনে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে এতদিন মন্ত্রণালয় রহস্যজনক কারণে ‘নিশ্চুপ’ ছিল। এমনকি এ সংক্রান্ত মিটিং পর্যন্ত হয়নি।
যদিও এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিভাগ ও অনুষদ খোলার অনুমোদন বন্ধ এবং সমাবর্তন আয়োজনের অনুমতি স্থগিত থাকার কথা। সেই অবস্থান থেকেও সরে আসা হয়েছে। অবশেষে চার বছরে এ প্রথম শোকজের মতো ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
Discussion about this post