নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০০ বছরে অনেক অর্জন রয়েছে। কিন্তু আগামী একশ বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয় কী করবে তা নিয়ে মহাপরিকল্পনার ওপর জোর দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভূটানের প্রধানমন্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই লোটে শেরিং ভার্চ্যুয়ালি শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। সম্মাননীয় অতিথি ছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ ও ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশেনের সভাপতি এ কে আজাদ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। আর স্বাগত বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও শতবর্ষ উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এ. এস. এম. মাকসুদ কামাল।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, নবাব সলিমুল্লাহ এবং সৈয়দ নবাব আলী চৌধুরীর মত নেতাদের কাছে তৎকালীন পূর্ব বাংলায় একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয় এবং তারা তা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার একটি ঐতিহাসিক সম্পদ এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম একদিন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আপনারা সময় নষ্ট করবেন না। আপনারা আমাদের ভবিষ্যৎ। সোনার বাংলা গড়তে যে ধরনের আত্মপ্রত্যয় থাকা দরকার তা অর্জনে অবশ্যই আপনাদের সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। ২৫ বছর পর তাকে এই বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। আপনারা সেই বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষিত, বুদ্ধিদীপ্ত, মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ ঘটিয়ে একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির বিবর্তন ও উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অব্যাহতভাবে অনন্য সাধারণ ভূমিকা রেখে চলেছে। আন্তর্জাতিক জ্ঞানরাজ্যেও এই প্রতিষ্ঠানের অবদান অনস্বীকার্য। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বর্তমান প্রজন্মকে যোগ্য করে গড়ে তোলাই আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
নৈতিক মূল্যবোধ ও মানবিক আচরণের উৎকর্ষ সাধনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ অর্জন ও সরকারের ‘পরিপ্রেক্ষিত রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নে আমাদের সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে। এ লক্ষ্যে শিক্ষা কারিকুলাম পুনর্গঠনসহ মৌলিক গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম জোরদারের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগ সফল করার ক্ষেত্রে তিনি অ্যালামনাই এবং শিল্প ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শতবর্ষের তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ঢাবির শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ ও ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন।
উৎসবের উদ্বোধনী দিন থেকে ৪ ডিসেম্বর এবং ১২ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিকেল ৪টায় আলোচনা সভা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। এতে প্রথিতযশা শিল্পী ও সাংষ্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ এবং নৃত্যকলা বিভাগের শিল্পী ও অ্যালামনাইরা অংশ নেবেন।
Discussion about this post