নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে হতদরিদ্রদের জন্য গঠিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ তহবিলে দুইদিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বুধবার (১ এপ্রিল) এ অর্থ গ্রহণ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত শিক্ষকদের জন্য লেখা এক চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ বিশ্বজুড়ে মহামারির রুপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ২০০টি দেশের জনগণ এই ভাইরাসে আক্রান্ত। বাংলাদেশেও এর বাইরে নেই। এখানেও করোনার সংক্রমণ দেখা দিয়েছে এবং আইইডিসিআরের ভাষ্য মতে, ইতোমধ্যে কমিউনিটি পর্যায়ে এর প্রসারও ঘটেছে। এই প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সতর্কতার অংশ হিসেবে সব ধরনের জনসমাগম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসটি আরো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। ফলে স্বাস্থ্যসেবায় অধিক আর্থিক বরাদ্দ যেমন প্রয়োজন হবে, তেমনি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবসহ আর্থিক ও সামাজিকব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়ার বিরুদ্ধেও আমাদের সজাগ থাকতে হবে। বর্তমানে দৈনিক খেটেখাওয়া হতদরিদ্র শ্রেণী-পেশার মানুষের ওপর এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে এর ফল হতে পারে সুদূরপ্রসারী। সরকার হতদরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও খেটেখাওয়া মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। অন্যান্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকেও এগিয়ে আসার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। সমাজের অগ্রসর মানুষ হিসেবে এই চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণের জন্য আমাদেরও জোরালো ভূমিকা নেওয়ার এখন প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কার্যকর পরিষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণেরর কথা জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ঢাবির শিক্ষকদের ২ (দুই) দিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে শিক্ষক সমিতির কার্যকর পরিষদের সদস্যদের ছাড়াও প্রায় ১০০জন শিক্ষকের সঙ্গে আমরা টেলিফোনে কথা বলেছি ও তাদের মতগ্রহণ করেছি। চারিদিকে যখন আমরা সবাই গৃহাভ্যন্তরে কাল কাটাচ্ছি, এ সময় এই মানবিক সহায়তার সঠিক প্রয়োগ ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তা দেওয়াই যুক্তিযুক্ত হবে বলে আমরা মনে করি। এ অর্থ আগামী ৪ মাসে প্রদেয় বেতন থেকে সমান কিস্তিতে কর্তন করা হবে।
অনিবার্যকারণে যদি কেউ এ অর্থ প্রদানে অপারগ অথবা অনিচ্ছুক বা বেশি অর্থ দিতে আগ্রহী হন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালকের কাছে ৫ এপ্রিলের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।
Discussion about this post