শিক্ষার আলো ডেস্ক
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে করা কোয়াককোয়ারেল সাইমন্ডসসহ (কিউএস) স্বীকৃত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর র্যাংকিংয়ে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষকদের গবেষণায় অনাগ্রহ, ল্যাবগুলোর আধুনিকায়ন না হওয়া, অপর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ ও সুশাসনের অভাবসহ নানা সংকটে ভুগছে। ঢাবি ও বুয়েটের র্যাংকিংয়ে অধোগতিতেও মূলত এসব বিষয়ই প্রভাব ফেলেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক কিউএসের কিউএস এশিয়া ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংস-২০২২ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে ঢাবি ও বুয়েটের অবস্থান যথাক্রমে ১৪২ ও ২০২তম।
তিন বছর আগে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওই সময়ে র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দুটির অবস্থান ছিল যথাক্রমে ১২৭ ও ১৭৫তম। এ তিন বছরে র্যাংকিংয়ে ক্রমেই অবনমন ঘটেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দুটির।
তবে শুধু র্যাংকিংয়ে অবস্থান দিয়ে যেমন ঢাবিকে মূল্যায়ন করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, শতবর্ষের পথচলায় ঢাবির এমন কিছু অর্জন ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে, যা দেশের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই। আবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কলেবর বড় হওয়ায় কিছু বিষয়ে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব বা মনোযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চাকরির বাজারে আমাদের সব গ্র্যাজুয়েট আশানুরূপ দক্ষতা দেখাতে পারছেন না।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং, কোয়ালিটি অ্যাশিউরেন্স (এসপিকিউএ) বিভাগের পরিচালক ড. মো. ফখরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে গবেষণার বিষয়টি অবহেলিত। এজন্য শিক্ষকদের মধ্যে গুণগত গবেষণা ও প্রকাশনার আগ্রহ অনেক কম। এসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে পড়ছে।
এদিকে, একই সময়ে র্যাংকিংয়ে ঢাবি-বুয়েট পেছালেও উন্নতি করেছে বেসরকারি খাতের এনএসইউ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
কিউএসের সর্বশেষ প্রকাশিত সূচকে দেখা গেছে, বিদেশী শিক্ষার্থী ক্যাটাগরিতে ১০০ পয়েন্টের সূচকের মধ্যে ঢাবি ১ দশমিক ৪, বুয়েট ১ দশমিক ৫, ব্র্যাক ৬ দশমিক ২ ও এনএসইউ ৯ দশমিক ৭ পেয়েছে। এ চার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিদেশী শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ঢাবি ও বুয়েটের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে বেসরকারি খাতের বিশ্ববিদ্যালয় দুটি।
র্যাংকিংয়ে অগ্রগতির বিষয়ে এনএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের উচ্চশিক্ষা খাতে অসামান্য অবদান রেখে যাচ্ছে এনএসইউ। কিউএস র্যাংকিংসে এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় ধারাবাহিকভাবে সম্মানজনক স্থান লাভ করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বর্তমানে দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেতাব অর্জনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি।
Discussion about this post