শিক্ষার আলো ডেস্ক
আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ২০১৯ ব্যাচের পরীক্ষার্থীরা। এর কারণ, এক দিনে দুটি করে পরীক্ষা রাখা হয়েছে। এমনকি বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতেও এক দিনে দুটি পরীক্ষা হবে। এটা দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে।
আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে বাউবির এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সারাদেশের প্রায় পাঁচ লাখ পরীক্ষার্থী এতে অংশ নেবেন। পরীক্ষার্থীরা জানান, সাধারণ অপেক্ষাকৃত দুর্বল অথবা কোনো কারণে ড্রপ আউট হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরাই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এক দিনের দুটি পরীক্ষা তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
এ ছাড়া মানবণ্টনেও সমস্যা রয়েছে। সাধারণ শিক্ষায় এইচএসসি পরীক্ষায় ১২টি নৈর্ব্যক্তিক (এমসিকিউ) প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। অথচ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ২০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। তবে সাধারণ ধারার পরীক্ষার সঙ্গে বাউবির পরীক্ষার সময়সীমা একই, লিখিত ও নৈর্ব্যক্তিক অংশ মিলিয়ে মোট দেড় ঘণ্টা। পরীক্ষার্থীরা এই রুটিন অবিলম্বে সংশোধনের জন্য বাউবি কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
বাউবির এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি গত ২৪ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। এতে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষ এবং দ্বিতীয় বর্ষের নৈর্বাচনিক কোর্সের প্রথম এবং দ্বিতীয় উভয় বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে একই দিনে শিক্ষার্থীদের দুটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। এতে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি শিক্ষার্থীদের তুলনায় বাউবির শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ বেশি পড়ছে বলে কয়েকজন পরীক্ষার্থী সমকালকে জানান।
নাইমুল ইসলাম সুজন নামে এক পরীক্ষার্থী জানান, বাউবির এইচএসসি প্রোগ্রামের শিক্ষা কার্যক্রমকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম বর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম এবং পরীক্ষার ফল প্রথম বছরে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং একই পদ্ধতিতে দ্বিতীয় বর্ষের ফল ঘোষণা করার পর সনদ প্রদানের রীতি প্রচলিত আছে। আগের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী ২০১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অটো পাসের কারণে তাদের প্রথম বর্ষ সমাপ্ত হয়েছে ধরে প্রথম বর্ষের পড়াশোনা বন্ধ রেখেছিল।
তিনি জানান, গত ১৯ নভেম্বর ছিল এই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। সেই সময়ে সংশ্নিষ্ট স্টাডি সেন্টার থেকে পরীক্ষার সম্ভাব্য একটা তারিখ জানানো হয়। তবে প্রথম বর্ষের বিষয়গুলোতেও আবার পরীক্ষা দিতে হবে এমন কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। পরীক্ষার মাত্র ২০ দিন আগে বাউবি কর্তৃপক্ষ একই সঙ্গে প্রথম বর্ষেরও পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এই ধরনের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের সমান।
এসব বিষয়ে বাউবির ওপেন স্কুল অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, পরীক্ষার রুটিন ও মানবণ্টন এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে এবং তা আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন এই মুহূর্তে তা সংশোধনের আর কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, এবার শিক্ষার্থীদের তো সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে না। শুধু নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে তাদের। আর বাউবিতে সব সময়ই একই বিষয়ের প্রথমপত্র পরীক্ষা সকালে এবং দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা বিকেলে নেওয়া হয়।
Discussion about this post