শিক্ষার আলো ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলে বিবাহিত ছাত্রীদের থাকার যে বিধিনিষেধ তা বাতিলের দাবি উঠেছে। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা।
১৮ উর্ধ্ব মেয়েদের বিয়ে করে হলে থাকতে সমস্যা কোথায় এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। সেইসঙ্গে তারা প্রশ্ন তুলেছেন, বিবাহিত হওয়া অপরাধ কি-না।
বিবাহিত হওয়ায় সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল ও সামসুন নাহার হলে দুই শিক্ষার্থীর সিট কেটে দিয়েছে হল প্রশাসন। পরে শিক্ষার্থীরা হল প্রধ্যক্ষের নিকট আবেদন জানিয়ে কোনো আশ্বাস না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট এ নিয়ম বাতিলের দাবিতে চার দফা দাবি পেশ করেন।
সেদিন উপাচার্য জানান, আমাদের পূর্বপুরুষরা মূল্যবোধ ও সামাজিক দিক বিবেচনায় নিয়মগুলো অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সেখানে অনেক ভালো নিয়মও আছে। তবে বর্তমান সময়ে তা যৌক্তিক কিনা তা পর্যালোচনার দাবি রাখে। একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় এ বিষয় আলাপ করতে হবে। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ম বলবৎ থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে পাঁচটি হলের ছাত্রীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শামসুন নাহার হল সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিশমা, সুফিয়া কামাল হল সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শারমিন, সুফিয়া কামাল হল সংসদের সাবেক পাঠকক্ষ সম্পাদক অর্পিতা প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে ইমি বলেন, বিবাহিত হওয়া কি অপরাধ? আর বিবাহিত স্ট্যাটাসের সাথে হলে থাকার সম্পর্ক কোথায়। একজন ছাত্রী বিবাহিত না অবিবাহিত সেটা দেখে হলে সিট কেনো বরাদ্দ হবে, যেখানে সে মেরিট অনুযায়ী লিগ্যাল সিট পায়?
তিনি বলেন, এই করোনায় অনেক ছাত্র ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। তারা কোথায় যাবে এখন? এত খরচ কোথা থেকে বহন করবে ছাত্রীরা? একজন ছাত্রী যদি বিবাহিত হয়ে হলে থাকা অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের মতে হলের হাউজটিউটর এবং প্রভোস্টদের অবিবাহিত হতে হবে, বিবাহিত হলে ওনারা হাউজটিউটর কোয়ার্টারে থাকতে পারবেন না। ওনাদের স্বামী ওনাদের কি দায়িত্ব নিতে পারেন না?
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ বিষয়ে তাদের কোনো কথাই শুনতে চাইছে না হল প্রশাসন, অথচ পাঁচ বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া ছাত্রলীগের হল কমিটির নেতারা এখনো হলে থাকে। এ সময় দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন বলে জানান তারা। তারা হল প্রশাসন কতৃক বিবাহিত মেয়েদের মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রীদের পক্ষ থেকে চারটি দাবি তুলে ধরেন শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি। দাবিগুলো হলো:
১। বিবাহিত ছাত্রীদের হলে থাকার যে বিধি-নিষেধ এবং তাদের জন্য প্রচলিত যে নিয়ম তা বাতিল করতে হবে।
২। শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষার্থে সকল ছাত্রী হলে লোকাল গার্ডিয়ান বা স্থানীয় অভিভাবকের পরিবর্তে ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট বা জরুরি যোগাযোগ শব্দটি রাখতে হবে।
৩। আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দ্বারা যেকোনও ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
৪। শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুনর্বহাল করতে হবে এবং জরুরি প্রয়োজনে তাদেরকে হলে অবস্থান করতে দিতে হবে।
Discussion about this post