শিক্ষার আলো ডেস্ক
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রভোস্ট থেকে পদত্যাগ করা শিক্ষিকা নিরাপত্তা চেয়ে রেজিস্ট্রার বরাবরে আবেদন করায় আজ সন্ধ্যায় তার বাসার সামনে আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হুমায়ুন কবীর আজ রাতে এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
পদত্যাগ করা ওই শিক্ষিকা তার আবেদনে দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব এর আগে তাকে লাঞ্ছিত ও জীবননাশের হুমকি দেন। তাই গত ১৫ ডিসেম্বর দোলনচাঁপা ছাত্রীহলের প্রভোস্ট পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। পরে ১৬ ডিসেম্বর সহকর্মীদের প্রটেকশন নিয়ে মহান বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীতে ফুল দিতে গেলে রাকিবুলের পাশে থাকা দুই ছাত্র তাকে দেখে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও অট্টহাসি হাসে। তখন তার সহকর্মীরা তাকে বাসায় রেখে আসেন। তার পর থেকে কতিপয় শিক্ষার্থী বিভিন্ন স্থান থেকে তার বাসার দিকে নজর রাখছে। রাকিব ও তার সঙ্গীদের প্রকাশ্য হুমকির মুখে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি কার্যত বাসায় বন্দি। এমতাবস্থায় তিনি নিরাপত্তা প্রদানে বিশ্ববিদ্যায়ের রেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন জানান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার ড হুমায়ুন কবীর বলেন, আজ সন্ধায় তার আবেদন পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে অবগত করা হয়। তার বাসার সামনে আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোট দিতে বলা হয়েছে।
এই তদন্ত কমিটির সভাপতি হলেন কলা অনুষদের ডিন ড আহমেদুল বারী, সদস্য বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের প্রভোস্ট নুসরাত সারমিন তানিয়া, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মাহির উদ্দিন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শাহাবউদ্দিন, আইন ও বিচার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. ইরফান আজিজ।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দোলনচাঁপা ছাত্রীহলে উন্নত খাবার পরিবেশনের আয়োজন করা হয়। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান বিজয় দিবসের বিশেষ খাবারের আয়োজনের সব টাকা তাঁর হাতে তুলে দিতে বলেছিলেন। কিন্তু ওই টাকা না দেওয়ায় ওই ছাত্রলীগনেতা প্রাধ্যক্ষসহ পাঁচ শিক্ষককে হুমকি দেন এবং তাঁদের অপমান করেন। এ ঘটনায় প্রাধ্যক্ষসহ ওই পাঁচ শিক্ষক গতকাল বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসানকে একাধিক বার তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।তদন্ত কমিটির সভাপতি ড. আহমেদুল বারী বলেন, তদন্ত কমিটির কথা তিনি শুনেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, তাই কাগজ হাতে পাননি। তবে কাজ চলমান আছে।
Discussion about this post