শিক্ষার আলো ডেস্ক
ডিজিটাল বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পেতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিকল্প নেই বলে মত দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, শিল্প চ্যালেঞ্জ অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয় ও এর শিক্ষক-গবেষকদের যেমন এগিয়ে আসতে হবে, তেমনি ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ব্যক্তিদেরকেড়ও সমানতালে কাজ করতে হবে। পারস্পারিক সহযোগিতা বজায় রেখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলেই নতুন এই বিপ্লবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ আয়োজিত ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’ শীর্ষক তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বাচল আমেরিকান সিটিস্থ স্থায়ী ক্যাম্পাসে দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চীন, জাপান, ফ্রান্স, থ্যাইল্যান্ড, সুইডেন ও সৌদি আরবসহ বিশ্বের ৩১টি দেশের শতাধিক গবেষক ও অধ্যাপকরা অংশ নেন।
আজ শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির, সম্মেলনের জেনারেল চেয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, আইইইই ফেলো ও যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি’র অধ্যাপক সজল কে দাস ও সম্মেলনের অর্গানাইজিং চেয়ার অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আজাদ।
সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষিত ও তরুণ প্রজন্মকে কাজে লাগাতে হবে। তাদেরকে প্রযুক্তিগত জ্ঞানদানের পাশাপাশি বৈশ্বিক মানদণ্ড গড়ে তুললেই এই বিপ্লবের সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। এ সময় তিনি তরুণদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহবান জানান।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগাতে আইসিটি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপাদান তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবট, ইন্টারনেট অব থিংস ও ন্যানোপ্রযুক্তির মতো উদ্ভাবন যেমন আমাদের যেমন সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে, তেমনি নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের উদ্ভব ঘটাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
সম্মেলনের জেনারেল চেয়ার ও গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন আকাশচুম্বী। তারপরও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অনেক সম্ভাবনাময় অর্জন বাকি। টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। তবেই আগামীতে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পাওয়া সম্ভব হবে।
সম্মেলনকে শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইন্ড্রাস্ট্রি পার্সন ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির মাধ্যম হিসেবে আখ্যায়িত করেন অর্গানাইজিং চেয়ার এবং বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আজাদ। উদ্বোধনী বক্তৃতায় সম্মেলনের নানাদিক নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে আইইইই ফেলো ও যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি’র প্রফেসর সজল কে দাস; আইইইই ফেলো ও সিঙ্গাপুরের রোলস রয়ছে ইলেক্ট্রিক্যালের প্রধান অমিত কে গুপ্ত; যুক্তরাষ্ট্রের পারডু বিশ্ববিদ্যালযয়ের তড়িৎ ও কম্পিউটার প্রকৌশলের প্রফেসর মুহাম্মদ আশরাফুল আলম; আইইইই ফেলো ও ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডের তপন সাহা, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব সাচকাচুয়ানের প্রফেসর ড. চঞ্চল রায়; উহান টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ঝি চেন এবং জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ড্রেসডেনের ড. ইঞ্জিনিয়ার মনিরুদ্দোজা আশির মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন।
এদিকে গবেষক ও শিল্প অনুশীনকারীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে কমন প্ল্যাটফর্ম তৈরির লক্ষ্যে প্রথমবারের মত কাজ করছে এসটিআই এক্সপো-২০২১। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ ৭০টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৮টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে তিন শতাধিক শিক্ষক, গবেষক, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও পলিসি প্ল্যানারগণ অংশ নেন।
Discussion about this post