শিক্ষার আলো ডেস্ক
টাঙ্গাইলে অবস্থিত মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) আলেমা খাতুন ভাসানী ছাত্রীনিবাসে বিবাহিত ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে হল ছাড়তে গত ১১ ডিসেম্বর নোটিশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
নোটিশে বলা হয়েছে, হলের নিয়ম অনুযায়ী বিবাহিতা ছাত্রীদের হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ নেই। তাই তাদের আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সিট ছেড়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হল।
কোন ছাত্রী বিবাহিতা হলে অবিলম্বে হল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে। অন্যথায় নিয়ম ভঙ্গের কারণে জরিমানাসহ তার সিট বাতিল করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
হল কর্তপক্ষের এমন নোটিশের পর বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া গছে। শিক্ষার্থীরা এমন সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে উল্লেখ করেছেন। তাশেকুল ইসলাম তুষার নামে এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, এটা মেরুদণ্ডহীন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। তিনি জানতে চেয়েছেন, ছাত্রী বিয়ে করলে কোন সংবিধানে আছে তাকে হল থেকে বের হয়ে যেতে হবে?
বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, একজন মেয়ের বিয়ের আগে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বাবা-মায়ের থেকে আর্থিক এবং মানসিক যে সাপোর্ট থাকে; বিয়ের পর সেটা কমে যায়। যার কারণে বিবাহিত নারী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কর্তৃপক্ষের তাদের থেকেও মুখ ফিরিয়ে নেওয়াটা সত্যিই দুঃখজনক। আমার অনেক বিবাহিত সহপাঠীকে দেখেছি যাদের এই সমস্যাগুলো হচ্ছে। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় বিবাহিত-অবিবাহিত বলে নারীদের প্রতি এই বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়টির সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলেমা খাতুন ভাসানী ছাত্রীনিবাসের নিয়ম অনুযায়ী, ‘‘কোন ছাত্রী বিবাহিত হলে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। অন্যথায় নিয়মভঙ্গের কারণে তার সিট বাতিল হবে। অন্তঃসত্ত্বা কোন ছাত্রী ডরমিটরিতে থাকতে পারবে না।’’
আলেমা খাতুন ভাসানী ছাত্রী নিবাস প্রভোস্ট ড. রোকসানা হক রিমি গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে সিটের তুলনায় অনেক শিক্ষার্থী আবেদন করায় বিবাহিতদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিয়মের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই আমাদের। প্রয়োজনের প্রক্ষিতে এ দরখাস্তটা করা হয়েছে।
Discussion about this post