শিক্ষার আলো ডেস্ক
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সব স্তরের শিক্ষার্থীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বর্তমানে ক্লাসভিত্তিক জ্ঞানে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। এজন্য চলতি শিক্ষাবর্ষ বাড়িয়ে জুলাই পর্যন্ত করার দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) গণসাক্ষরতা অভিযানের আয়োজনে ‘শিক্ষাক্ষেত্রে অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও আগামীর ভাবনা’ সংক্রান্ত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এমন দাবি জানানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের সিলেবাস থেকে পিছিয়ে পড়েছে। বর্তমানে ক্লাস স্তর অনুযায়ী তাদের জ্ঞান যাচাই প্রয়োজন। অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও ক্লাস অনুযায়ী শিক্ষার্থীর জ্ঞানের মূল্যায়ন হচ্ছে না। বর্তমানে অটোপাস দিয়ে সব শিক্ষার্থীকে পরবর্তী ক্লাসে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে থাকবে। বিশেষ করে মৌলিক বিষয় বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞানার্জন নিশ্চিত করাতে হবে। নতুবা পরবর্তী ক্লাসে গিলে তারা নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের অটোপাসের বদলে প্রয়োজনে চলতি শিক্ষাবর্ষ বৃদ্ধি করে তা জুলাই পর্যন্ত নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের কীভাবে ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব সে বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও এ সংক্রান্ত নির্দেশনা তৈরি করে দিতে হবে। তার আলোকে ক্লাসে পড়াতে হবে।
করোনায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে আলোচকরা বলেন, প্রতিবন্ধীরা হচ্ছে সমাজের মানুষের একটি বৈচিত্র্য। এমনিতেই প্রতিবন্ধী শিক্ষাকে অবহেলার চোখে দেখা হয়ে থাকে, তার ওপরে করোনার কারণে এ স্তরের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঝড়ে গেছে।
তারা বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য একীভূত শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। এ শিক্ষাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় এনে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো তৈরি করার দাবি জানান তারা।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমাদের নীতি আছে, আইন আছে তারপরও তা বাস্তবায়ন বা কার্যকর হচ্ছে না। সরকারকে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের আওতায় আনতে হবে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে একীভূত শিক্ষা বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। আরও ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আরমা দত্ত, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, এনজিওকর্মী প্রমুখ।
Discussion about this post