শিক্ষার আলো ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মেসি বিভাগে সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে ভর্তি অনিশ্চিত ছিল দরিদ্র পরিবারের ছেলে রাখাল চন্দ্র রায়ের। বিষয়টি জানার পর তার পড়াশোনা দায়িত্ব নিয়েছেন ঢাবির ডিপার্টমেন্ট অব ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক ড. শিমুল হালদার।
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় রাখালকে ফোন করে তার পড়াশোনা দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানান এ শিক্ষক।
রাখাল লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম ভেলাবাড়ী গ্রামের বর্গাচাষি উকিল চন্দ্র রায়ের (৫৫) ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। বড় ভাই বিয়ে করে আলাদা থাকেন।
স্কুলজীবন থেকে অদম্য মেধাবী ছাত্র রাখাল। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছেন। আদিতমারি হাজিগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় তিনি ৫৫০ তম হয়েছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও যাতায়াতের খরচ বহন তার বৃদ্ধ বাবার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। তাই দুশ্চিন্তা আর হতাশায় দিন কাটছিল রাখালের।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক শিমুল হালদারের নজরে আসে। তখন তিনি রাখালের পড়াশোনার দায়িত্ব নেন।
এ বিষয়ে ঢাবি শিক্ষক বলেন, আমি রাখাল চন্দ্র রায়ের লেখাপড়ার যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। রাখালের ভর্তি হওয়া, থাকা-খাওয়া ও পড়াশুনার খরচ বহন করবো।
রাখাল চন্দ্র রায় বলেন, আমি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম হয়তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হবে না। কিন্তু অধ্যাপক শিমুল হালদার স্যার আমার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের জন্য কাজ করবো।
রাখালের মা সুমিত্রা রানী রায় বলেন, পরিবারে অভাব-অনটনের মধ্যেও ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছি। এখন ছেলে ঢাকায় পড়াশোনা করবে। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে এতো টাকা জোগাড় সম্ভব হচ্ছিল না। ঢাবি শিক্ষক আমার ছেলের দায়িত্ব নিয়েছেন। এখন আর তার পড়ার কষ্ট হবে না।
আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, রাখাল চন্দ্র বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। মানুষের জায়গা জমি চাষ করে সংসার এবং ছেলের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে সহযোগিতা করা হবে।
Discussion about this post