শিক্ষার আলো ডেস্ক
বছরের প্রথম দিন সারাদেশে শিক্ষার্থীদের হাতে কয়েক কোটি নতুন বই তুলে দিয়ে রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ। তবে এসব বইয়ে প্রতি বছরই ভুল ও অসঙ্গতি থেকেই যাচ্ছে। মাধ্যমিকের ৭টি পাঠ্যবইয়ে মিলেছে প্রায় অর্ধশত ভুল। আছে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে মনগড়া তথ্য।
এটি অমার্জনীয় দাবি করে শিক্ষাবিদরা বলছেন, পেশাদার লেখক নির্বাচন না করে, স্বল্প সময়ে ও নামমাত্র সম্মানি দেয়ায় মানসম্মত বই থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
২০২২ শিক্ষাবর্ষের নবম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের ২৮ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, জেনারেল এরশাদের ত্রয়োদশ সংশোধনী সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দেয়। অথচ ত্রয়োদশ সংশোধনী হয় খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের আমলে।
একই বইয়ের বলা হয়েছে, পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয় ২০০৮ সালে। অথচ তা বাতিল হয় ২০০৯ সালে।
সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের ১৪ নম্বর পৃষ্ঠায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ হানাদার বাহিনীর হাতে বঙ্গবন্ধুর আটক থাকার যে ছবি দেয়া হয়েছে তা মূলত করাচি বিমানবন্দরের ছবি। এছাড়া ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের ১০ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ অর্জন করে স্বাধীনতা। প্রকৃতপক্ষে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়।
এমন ভুল অমার্জনীয় দাবি করে শিক্ষাবিদরা বলছেন, বই লেখা ও সম্পাদনায় উপযুক্ত সম্মানী না থাকায় পেশাদারিত্বের সাথে এসব কাজ করেন না দায়িত্বপ্রাপ্তরা। ফলে বারবার থেকেই যাচ্ছে ভুল।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বলেন, যথাযথ ব্যক্তিকে নির্বাচন না করে, দলীয় আনুগত্যের কথা বিবেচনা করে লোকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ভুল হলে সেটা ভুলই। সেটা অবশ্যই আমাদের সংশোধন করতে হবে। পাঠ্যবইয়ে ভুলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসব ভুল সংশোধনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে কয়েকবার তলবও করেছে আদালত। এরপরও ভুল থেকে যাওয়া গাফিলতি ছাড়া কিছু নয়, বলছেন শিক্ষাবিদেরা।
Discussion about this post