শিক্ষার আলো ডেস্ক
নগরে ১২-১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের কমিউনিটি সেন্টারে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয় গত সোমবার। প্রথম দিন তিনটি কমিউনিটি সেন্টারে মোট ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা প্রয়োগের সিডিউল করা হয়। এতে করে শিক্ষার্থীদের অস্বাভাবিক ভিড়ে কেন্দ্রগুলোর আশেপাশের সড়কে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। তবে টিকা নিতে এসে যেন কেন্দ্রেই করোনা আক্রান্তের উচ্চ ঝুঁকিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য বিভাগও। করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি কমাতে টিকাদান কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানোর নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
নির্দেশনার প্রেক্ষিতে নগরের টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগের দিনের প্রায় অর্ধেক কমানো হয়েছে। অর্থাৎ সোমবার তিনটি কেন্দ্রে যেখানে ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা প্রয়োগের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়, সেখানে বৃহস্পতিবার (আজ) চারটি কেন্দ্রে সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। হিসেবে টিকা গ্রহীতা শিক্ষার্থীর সংখ্যা অর্ধেকে নামানো হল।
চট্টগ্রামের জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলম হোসাইনী ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. আসিফ খান শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানোর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা বলছেন, দিন দিন করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। ওমিক্রনও ছড়ানোর শঙ্কা রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রে যাতে বেশি শিক্ষার্থীর ভিড় করা না হয়, এর জন্য ঢাকা থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীদের আক্রান্তের ঝুঁকিতে পড়তে না হয়। নির্দেশনার প্রেক্ষিতে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক কমানো হয়েছে। এর ফলে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে কম সংখ্যক শিক্ষার্থী টিকা নিতে আসবে।
জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত টিকাদানের পাশাপাশি নতুন করে চারটি কেন্দ্রে টিকাদান চলছে। নতুন চারটি কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে- আসকার দীঘির পাড়ের রীমা কনভেনশন সেন্টার, সিরাজ উদ্দৌল্লাহ সড়কের হল সেভেন-ইলাভেন, এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সিজেকেএস মিলনায়তন ও স্টেডিয়াম সংলগ্ন অফিসার্স ক্লাব।
এ চার কেন্দ্রে বুধবার (গতকাল) প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (আজ) টিকা প্রয়োগের জন্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ১২ হাজার (১২ হাজার ৬৭২ জন)। হিসেবে আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক কম শিক্ষার্থীকে বৃহস্পতিবার (আজ) থেকে টিকা দেয়া হবে। এ তথ্য নিশ্চিত করে জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলম হোসাইনী বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানো হয়েছে। আগের দিন যেখানে ৬ হাজার শিক্ষার্থীকে টার্গেট ধরা হয়েছিল, সেখানে এখন ৩ হাজারের মতো টার্গেট ধরা হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি কমবে। তাছাড়া ভিড় কমে যাওয়ার কারণে মানুষেরও ভোগান্তি কমবে।
জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের তথ্য মতে, বুধবার সিজেকেএস ও রীমা কনভেনশন সেন্টারে ৬ হাজার করে, হল সেভেন-ইলাভেনে ৫ হাজার ও অফিসার্স ক্লাবে ৩ হাজারসহ মোট ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা প্রয়োগের টার্গেট ছিল। তবে আগের দিন টিকা না নেয়া দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীও গতকাল কেন্দ্রে চলে আসে। তাদেরও টিকা দেয়া হয়।
নতুন সিদ্ধান্তে বৃহস্পতিবার সিজেকেএস ও রীমা কনভেনশন সেন্টারে সাড়ে তিন হাজার করে (৩৫৪৫ ও ৩৬১৭ জন) হল সেভেন-ইলাভেনে ২ হাজার ৮৩২ জন এবং অফিসার্স ক্লাবে ২ হাজার ৬৭৮ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সংখ্যা আগের কয়েকদিনের প্রায় অর্ধেক। এ চার কেন্দ্র ছাড়াও নিয়মিত টিকাদান চলমান ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার ও ডেপুটি সিভিল সার্জন। এছাড়া নগরের শিক্ষার্থীদের টিকা প্রয়োগে কেন্দ্র সংখ্যা আরো বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগের এই দুই কর্মকর্তা।
Discussion about this post