নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্বিতীয়বার ভর্তির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে এইচএসসি ২০২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হতে শুরু করেছে।
আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, বেলা ১১টা থেকে আমাদের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কর্মসূচি থেকে উপাচার্যকে আমরা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানাবো। যদি দাবি মেনে নেয়া না হয় তাহলে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করা হবে। এরপরও দাবি না মানলে আজ থেকেই অনশন শুরু করবো। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। আমরা সবাই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পালন করেই এই আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
তিনি আরও বলেন, রাবিতে ২০১৭ সালে সেকেন্ড টাইম চালু ছিল কিন্তু এখন নেই। আমরা চাই আবার সেকেন্ড টাইম চালু হোক। রাবিতে সিলেকশন সিস্টেম বাতিল করতে হবে কারণ এখানে অনেক সত্যিকারের মেধাবী প্রথমেই বাদ পড়ে যায়।শিক্ষার্থীদের এই দাবিকে সমর্থন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষকও কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পথ সংকুচিত করা উচিত নয়। একজন শিক্ষার্থী দুইবার সুযোগ পেতেই পারে।
এর আগে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ চেয়ে ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়া ভর্তিইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। ৬ ফেব্রুয়ারি, রবিবার বেলা ১২ টায় স্মরকলিপিটি ভিসি দপ্তরে জমা দেন তারা।এছাড়াও উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও ছাত্রউপদেষ্টাকেও স্মারকলিপির অনুলিপি প্রদান করেন তারা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আমরা দ্বিতীয়বার পরিক্ষা দিতে চাই। আপনারা জানেন, আমাদের এ ব্যাচটি করোনার কারণে নানা জটিলতায় পড়ে। একটা পরিকল্পনাহীন অটো পাসের মধ্য দিয়ে আমাদের রেজাল্ট কেন্দ্রীক নানানমুখী সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের পড়াশোনা একটা অগোছালো প্রক্রিয়ায় ছিলো। ফলে ভর্তি পরীক্ষাতেও অনেক বেগ পেতে হয়। আমরা শিক্ষার্থীদের একটা বৃহত্তর অংশ আবারও পরিক্ষায় বসতে চাই।’
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা অনেকেই ভালো প্রিপারেশন থাকা সত্ত্বেও সিলেকশন নিয়ম চালু থাকার কারণে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারিনি। অবিলম্বে সিলেকশন সিস্টেম বাতিল করে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা চালু হোক রাবিতে।’
প্রতি বছর রাবিতে আসন ফাঁকা থাকে জানিয়ে তারা বলেন, ‘প্রতি বছর নানা কারণে অনেক আসন ফাঁকা থাকে। দ্বিতীয় বার ভর্তির সুযোগ দিলে ফাঁকা আসনগুলোতে যোগ্য শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবে। অনেক সময় কোন কারণে পারিবারিক বিপর্যয়, অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনার কারণে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারে না। ফলে তাঁর স্বপ্নগুলো স্বপ্নই থেকে যায়। বরাবরের মতো দ্বিতীয় বাদ সুযোগ রাখলে তা সেই শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।’
উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী বলেছিলেন, ‘আমি তোমাদের দাবিগুলো শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যখন ভর্তি-পরীক্ষা কমিটি হয় তখন তোমাদের দাবিগুলো তাদেরকে জানাবো। তারা পর্যালোচনা করে সবার জন্য যে সিদ্ধান্ত ভালো হয়, সে সিদ্ধান্তই নিবেন বলে তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জানান।’
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগ দেয়ার পক্ষে। যদিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখনও কোন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসেনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছেন, তারা শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি দেখছেন। একডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন তারা।
Discussion about this post