নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযোদ্ধা কোটা অনুসারে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্যে ভর্তি হওয়া এক ছাত্রের বিভাগ পরিবর্তন এবং ‘খ’ ইউনিটে মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য বরাদ্দকৃত ১১৯টি আসন পূর্ণ করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি (শিক্ষা), রেজিস্ট্রার ও কলা অনুষদের ডিনের নামে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ছাত্র মোহাইমিনুলের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নোমান হোসাইন তালুকদার এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়, মোহাইমিনুল গত ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবর্ষ সম্মান শ্রেণীর ‘খ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রম ৩৫৩৫তম হিসেবে উত্তীর্ণ হন এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে ঢাবির কলা অনুষদের প্রকাশিত তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হন। কোটায় ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল যে, বিষয় পছন্দক্রমের ফর্মে উল্লিখিত বিষয়গুলোর সর্বনিম্নটি হলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মনোনীতদের দেওয়া হবে।
পরে সাক্ষাৎকারের দিন দেখা যায়, মোহাইমিনুলকে ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের জন্য মনোনীত করা হয়। যদিও মোহাইমিনুল ওই বিষয়ে অধ্যয়নে আগ্রহী না থাকায় তার পছন্দক্রমে আদৌ এই বিষয়টি ছিল না, যা কোটা ভর্তি বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে মোহাইমিনুল ওই বিষয়ে ভর্তি হতে বাধ্য হন।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ সম্মান শ্রেণীর ‘খ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় ১১৯টি আসন মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণবশত মোহাইমিনুলের উপরের মেধাক্রমের কয়েকজন শিক্ষার্থী সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করেননি। ফলে ফাঁকা আসনে মোহাইমিনুলের পছন্দক্রমের বিষয় অনুযায়ী তাকে ভর্তি অথবা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মনোনীতদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশনের সুযোগ দেওয়ার জন্য মৌখিক ও লিখিত অনুরোধ করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা সরাসরি অগ্রাহ্য করে। যদিও সাধারণ কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা মাইগ্রেশনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। ফলে এটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ ও বিধিমালা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।
তাই নোটিশ প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে মোহাইমিনুলসহ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ সম্মান শ্রেণীর ‘খ’ ইউনিটে মনোনীত সবার এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ প্রত্যাহার করে পছন্দক্রমের সর্বনিম্ন বিষয়ে হলেও ভর্তি হওয়ার সুযোগ প্রদান, মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য বরাদ্দকৃত ১১৯টি আসন পূর্ণ করা এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশনের সুযোগ প্রদানে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
Discussion about this post