শিক্ষার আলো ডেস্ক
প্রক্সির মাধ্যমে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেন শিক্ষার্থী ইকবাল। পরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এসে আটক হয়েছেন ইকবাল হোসেন সাঈদ নামের এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম চলাকালে ওই শিক্ষার্থী আটক হন।
আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা শাবি প্রক্টোরিয়াল বডির কাছে স্বীকার করেন ইকবাল। সে ছাড়াও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ তিন জনের নামও উঠে এসেছে প্রক্টোরিয়াল বডির জিজ্ঞাসাবাদে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আবু হেনা পহিল বলেন, আটক ইকবাল হোসেন সাঈদ দুই লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে আরেকজনের প্রক্সিতে ভালো স্কোর করেন গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায়। এতে সহায়তা করেছে ইকবালের বন্ধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান। এছাড়া একই বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শহিদুল ইসলাম নামের আরেক শিক্ষার্থীও এ ঘটনায় জড়িত। শহিদুল আতিকুরের বড়ভাই বলে জানিয়েছে ইকবাল।
আটক ইকবাল প্রক্টোরিয়াল বডির জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানান, তার বন্ধু চবির আতিকুর রহমান ও তার ভাই শহিদুল ইসলামই মূলত এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। ইকবাল হোসেনের ছবিতে ফটোশপের মাধ্যমে এডিট করে তার বদলে পরীক্ষায় প্রক্সি দেন রাশেদ নামের এক ব্যক্তি। এর বিনিময়ে ইকবালের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। যেটা আতিকুরের চকোরিয়ার ‘ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামিক ব্যাংক’ এর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়েছে।
জালিয়াতিতে জড়িত শহিদুল ও আতিকুরের নাম-পরিচয় উঠে আসলেও আটক হওয়া শিক্ষার্থী রাশেদ নামের প্রক্সি দেওয়া ওই ব্যক্তিকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন।
ভর্তি পরীক্ষা কমিটির এক সদস্য জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে শাবির ভর্তি কার্যক্রমে তৃতীয় পর্বে ভর্তির জন্য ভাইবা দিতে আসেন ইকবাল। এ সময় তার অসংলগ্ন আচরণ দেখে বোর্ডে থাকা দায়িত্বরত শিক্ষকের সন্দেহ হয়। বিশেষ করে, পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর সে ভাইবা বোর্ডে বলতে ব্যর্থ হয়। এমনকি ওএমআর শিট কিংবা হাজিরা শিটের স্বাক্ষরের সঙ্গেও গড়মিল পাওয়া যায়। এমনকি সে গুচ্ছ পরীক্ষাকালে সিট কোথায় পড়েছিল এসবও বলতে পারছিল না। পরে ভর্তি কমিটি বিস্তর জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। ভর্তি জালিয়াতিতে প্রাথমিক সত্যতা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডির নিকট ইকবালকে হস্তান্তর করে ভর্তি কমিটির সদস্যরা।
প্রক্টোরিয়াল বডি ইকবালকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সিলেটের জালালাবাদ থানা পুলিশে হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বাদী হয়ে একটি মামলাও দায়ের করেছেন।
উল্লেখ্য, ইকবাল হোসেন সাঈদের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় বি ইউনিটের আওতায় চট্টগ্রাম ভেটেনারি অ্যান্ড এনিমেল স্যায়েন্স ইউনিভার্সিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে সিট পড়ে। সেখানেই এ জালিয়াতি হয়। তার হয়ে রাশেদ নামে কেউ জালিয়াতি করে পরীক্ষা দিয়েছিল। শাবির ভর্তি কার্যক্রমের তৃতীয় পর্বে মানবিক বিভাগে মেধাক্রম ৭৫৮তম নিয়ে মানবিক শাখায় শাবিতে ভর্তি হতে এসেছিল ইকবাল। তার বাবা সৌদি আরব প্রবাসী রফিকুল ইসলাম। বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ার সবুজবাগ গ্রামে।
Discussion about this post