শিক্ষার আলো ডেস্ক
টিএসসির সবকটি ভাসমান চায়ের দোকানের টং, টেবিল, টুল, ডাস্টবিন, এমনকি কেটলিও তারা সাজিয়েছেন সুনিপুণ শৈল্পিক ঢঙে। রিকশা পেইন্টে টিএসসিজুড়ে অনিন্দ্য সুন্দর এক আবহ তৈরি হয়েছে। তাদের হাতের ছোঁয়ায় রং পেয়েছে পূর্ণতা। ফিতা দিয়ে সাজানো হয়েছে চত্বরের গাছগুলোকেও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সব চায়ের দোকান সেজেছে নতুন এক সাজে। সব ক্লান্তি শেষ করে যে টিএসসির চায়ের দোকানে আড্ডা জমায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা সেই চায়ের টংগুলো রিক্সা পেইন্টে মুড়িয়ে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
নতুন এই সাজে পুরো টিএসসিজুড়ে এক অসম্ভব সুন্দর আবহ তৈরি হয়েছে। এই চায়ের টংগুলো রিক্সা পেইন্ট করার উদ্যোগ নিয়েছে মিস ইউনিভার্সে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শিরিন আক্তার শিলা।
ঠাকুরগাঁওয়ের মেয়ে শিলার আরেকটি পরিচয় হলো, তিনি মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০১৯ এবং ফেস অব বাংলাদেশ ২০১৯ বিজয়ী। সঙ্গী শেরপুরের মেয়ে জেরিন সিন্থী। তিনি চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি তিনি ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদকও। আরও আছেন ময়মনসিংহের ছেলে সীমান্ত সাহা; তিনি পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী।
চায়ের টং দোকানকেই কেন বেছে নেওয়া- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো রাস্তা নেই যেখানে চায়ের দোকান নেই। আমরা যদি পশ্চিম-ইউরোপীয় দেশগুলো কিংবা ভারতের রাজস্থানের কথা চিন্তা করি, তারা তাদের রাস্তা-বাড়িঘর নিজেদের সংস্কৃতি দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে। চায়ের টং সবখানেই পাওয়া যায়। এসব ভেবেই আসলে এই চিন্তা মাথায় আসে।
প্রাথমিকভাবে টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শুরুর পরিকল্পনা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, টিএসসিকে অনেকে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বলে থাকেন। সাংস্কৃতিক ও স্বাধীনতা সংগ্রামসহ অতীতের নানা আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ এখান থেকেই শুরু। তাই, আমরা যদি টিএসসির রং পরিবর্তন করতে পারি, তবে আমরা আমাদের সমাজের রং পরিবর্তন করতে পারব।
আমার বরাবরই আর্ট-কালচারে দুর্বলতা। পোশাকে বাঙালি লুক আমার পছন্দের। চায়ের টং নাই এমন এলাকা বাংলাদেশে নেই এটা হতে পারে না। রিক্সা পেইন্ট দিয়ে যদি ফোক আর্ট ফুটিয়ে তুলতে পারি সেটায় আমাদের দেশের একটা ঐতিহ্য ধরা দিবে। তিনি বলেন, আমরা কাজটিকে নাম দিয়েছি ‘দ্বিতীয় অধ্যায় : চা এর কাপে রিক্সা পেইন্ট’।
Discussion about this post