নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী ১২ মার্চের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযােগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলে লাগাতার কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন এইচএসসি ২০২০ ব্যাচের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা কলেজের সামনে জড়ো হন ভর্তিচ্ছুরা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে নীলক্ষেত মোড় রাস্তা অবরোধ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কার্যালয়ের সামনে যান তারা। ভর্তিচ্ছুরা কার্যালয়ে প্রবেশের পথ আটকিয়ে সেখানে বিক্ষোভ করেন।
এ সময় তারা ‘উই ওয়ান্ট সেকেন্ড টাইম; সেকেন্ড টাইম কেন নাই, প্রশাসন জবাব চাই; শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই; আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে, দাবি মোদের সেকেন্ড টাইম, মানতে হবে মানতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
দুপুরের পর আন্দোলনকারীদের কাছে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী। তিনি ভর্তিচ্ছুদের অবরোধ তুলে নিতে বলেন। সেই সঙ্গে তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে প্রক্টর অফিসে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। কেবল আলোচনার মাধ্যমেই এর সমাধান হতে পারে বলে তিনি আশ্বাস দেন। তবে অবরোধ তুলে নিয়ে আলোচনায় আগ্রহ দেখাননি আন্দোলনকারীরা।
অন্যতম সংগঠক সংগ্রাম খান বলেন, আমরা গত ৩ মাস ধরে আন্দোলন করছি। কিন্তু ঢাবি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য দিচ্ছে না।আমাদের কোন দাবি বিশ্ববিদ্যালয়গুলাে মেনে নেয় নি। আমরা চাই আমাদের আর একবার সুযােগ দেয়া হােক। ইউজিসি, শিক্ষামন্ত্রী এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক আমাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এটা আমাদের অধিকার। অথচ ঢাবি উপাচার্য সম্প্রতি বলেছেন যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে।বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।যেভাবে ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে সেভাবেই আগামীতেও হবে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযােগ রয়েছে। এবং স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর ও মেডিকেলে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযােগ রয়েছে। তাহলে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলােয় কেন থাকবে না? অতিদ্রুত আমাদের দাবি মেনে নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। না হলে আমরা ছাত্র-শিক্ষক অভিভাবকসহ সমাজের বিবেকবান মানুষদের সাথে নিয়ে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবাে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাবিতে ভর্তির স্বপ্ন দেখা এক ভর্তিচ্ছু বলেন, ঢাবিতে সেকেন্ড টাইমের দাবি কোন ভিক্ষা নয়; এটা আমাদের অধিকার। গণতান্ত্রিক দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা মানি না। আমরা আমাদের অধিকার যেকোনো ভাবেই আদায় করবো। আমাদের পড়ালেখার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক।
অপর শিক্ষার্থী তানজিলা আহমেদ বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতি না থাকলে ২০টা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০টি পরীক্ষা দেওয়া যেত যার ফলে কোন কারণ বশত একটি পরীক্ষা খারাপ হলেও আরেকটা ভালো করার সুযোগ থাকতো কিন্তু গুচ্ছে সুযোগ একটি পরীক্ষা ই মাত্র। তাছাড়া গুচ্ছ পদ্ধতির কারণে অনেকেই পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ ই পায় নি কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতি না থাকলে cou,nstu,sust, etc আরও অনেক গুলাতে কম জিপিএ নিয়েও অন্তত একটা পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেকে খানিকটা প্রমান করার সুযোগটা পেতো কিন্তু গুচ্ছের সিলেকশন পদ্ধতির কারণে অনেকেই এই সুযোগটুকু পাইনি। অথচ এখন শতশত আসন খালি পড়ে আছে।
আন্দোলনের সমন্বয়ক মহিদুল ইসলাম দাউদ দাবীর সপক্ষে বলেন, শিক্ষামন্ত্রিসহ আর অনেক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদও মনে করেন বাংলাদেশ এ আধুনিক শিক্ষাবাবস্থা চালুর ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।শিক্ষামন্ত্রি নিজেই চান সেকেন্ড টাইম চালু করা হোক। আমাদের সাথে গুচ্ছে সেকেন্ড টাইমাররা এক্সাম দিয়েছিল তারা ২ বছর সময় পেয়েছিল প্রস্তুতির জন্য, তাছাড়া ও ভর্তিতে তাদের ১ মার্ক ও কাটা হয় নাই কিন্তু তারপরও আমরা কোনো বিরোধীতা করি নাই। কিন্তু আমাদেরকে এখন সেকেন্ড টাইমের জন্য কেন আন্দোলন করতে হয়?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাবি,চবি সর্বত্র সেকেন্ড টাইম ভর্তি পরিক্ষা রাখা উচিত।রাবি ২৬ তম মেধাতালিকা হতে ভর্তি নিতে পারলে (চার মাস যাবৎ) তবে সেকেন্ড টাইম কেনো দিবে না।।
রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নীলক্ষেত মােড়ে অবরােধ থেকে নুতন কর্মসূচির ঘোষণা দেন আন্দোলনের সমন্বয়ক মহিদুল ইসলাম দাউদ।তিনি বলেন, আগামী ১২ মার্চের মধ্যে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিনেট-সিন্ডিকেট-ভর্তি কমিটি ও একাডেমিক কাউন্সিলের সাথে বসে আলােচনা করে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার দেওয়ার ঘােষণা নােটিশ এর মাধ্যমে না দেয় তাহলে ১৩ মার্চ শাহবাগ মােড় অবরােধ করা হবে।
Discussion about this post