শিক্ষার আলো ডেস্ক
চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের অপরাধ ও অনুসন্ধান বিভাগের প্রধান জি এম ফয়সাল আলম রচিত ‘১৯৭১: অজানা গণহত্যা’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে উৎসবটি আয়োজিত হয়।
সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল ইমরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মুনতাসীর মামুন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার শাহাদাত হোসেন।
বইটিতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গাজীপুরের ইছরকান্দি গ্রামে সংগঠিত হওয়া গণহত্যার ঘটনাসমূহ স্থান পেয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে অন্বেষা পাবলিকেশন।
অনুষ্ঠানে ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ইছারকান্দী গ্রামটি এত প্রত্যন্ত অঞ্চলে যে এখনো আপনারা যেতে চাইবেন না। আমার সংসদীয় এলাকায় এমন একটি গণহত্যার খোঁজ পাওয়া গেছে জানার সঙ্গে সঙ্গে ইছরকান্দি গ্রামে ছুটে যাই। সেখানে একটি অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির পরিকল্পনা করি। শিগগিরই এখানে একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মুনতাসীর মামুন বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের হিসাবে ৩২ জেলায় সাড়ে ১৬ হাজার গণহত্যার খোঁজ পেয়েছি। গণকবরের খোঁজ পেয়েছি ৮০০টি। শরণার্থী শিবিরে অন্ততপক্ষে ৫ লাখ মানুষ মারা যান। ৬৪ জেলা হিসাব করলে মুক্তিযুদ্ধে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়াবে।
তিনি বলেন, বীরাঙ্গনার সংখ্যা ২ লাখ বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা ৫ লাখেরও বেশি। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অনেক তথ্য এখনো আমাদের অজানা। আপনাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গণহত্যা বা শান্তি বাহিনী, রাজাকারদের কোনো চিঠির নিদর্শন পান তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
বইটির লেখক জি এম ফয়সাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা একটা নির্দিষ্ট হারে ভাতা পান। তাদের আত্মীয়রা কোটায় সুযোগ সুবিধা পান। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার শিকারদের আত্মীয়রা কোনো সুযোগ সুবিধা পান না। তাদের আর্থিক সুবিধা না দিলেও ওই জায়গাগুলোর খোঁজ নিয়ে অন্তত স্মৃতিস্তম্ভ যেন তৈরি করা হয়। যাতে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারে।
ইছারকান্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু তালেব বলেন, একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমি প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম। পরবর্তীতে এই গণহত্যা সম্পর্কে তথ্য খোঁজ করি। ১৯৭১ সালের জুন মাসে একদিন সকালে আমি শুনি আমার বাবা মাকে পাকিস্তানি বাহিনী হত্যা করেছে। কিন্তু আমার দাদা তখন আমাকে ঘটনাস্থলে যেতে দেননি। পাকিস্তানিরা চলে যাওয়ার পর আমি নদীর পাড়ে গিয়ে শুনি দুজনকে হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
Discussion about this post