নিজস্ব প্রতিবেদক
পরীক্ষার হলে নকল ধরাকে কেন্দ্র করে চবির নাট্যকলা বিভাগের প্রভাষক তানভীর হাসান মিথুনকে ছাত্রলীগ নেতা রাজু মুন্সির দেওয়া হুমকির প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতি।
এ ছাড়া ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মুন্সিগঞ্জের রাজকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক ‘হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল ও নওগাঁর দাউল বারবাকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ‘আমোদিনী পালকে হেনস্তা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রভাষক মো. তানবীর হাসানকে কোনো এক ছাত্রের পরীক্ষার হলে নকল ধরার কারণে রাজু মুন্সি নামক এক ছাত্রনেতার টেলিফোনের মাধ্যমে হুমক প্রদান, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের পরিচালকসহ শিক্ষকদের রুমে হামলা, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্টের কক্ষে হামলা, শিক্ষকদের গাড়ি আটকে ছাত্রদের দাবি আদায়ের নামে শিক্ষকদের হয়রানি করা, শিক্ষক সমাজকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে। চবি শিক্ষক সমিতি মনে করে প্রতিটি ঘটনাই শিক্ষকদের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি ও মর্যাদার প্রতি আঘাত। শিক্ষকদের স্বাধীনতায় অযাচিত ভাবে হস্তক্ষেপ করা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বড় অন্তরায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের পথে বাধাগুলো অপসারণ করা এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের দায়িত্ব প্রশাসনের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে এর প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে বলে শিক্ষক সমিতি মনে করে। শিক্ষক সমিতি প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে।
আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি টিপকাণ্ড, হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা ও এবং নওগাঁর হিজাবকাণ্ড একইসূত্রে গাথা। দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র করছে একটি চক্র। তাই সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও ধর্মীয় উস্কানি সব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে বাংলাদেশকে বারবার অস্থিতিশীল করার সুযোগ পাচ্ছে দোষীরা। এতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য অশনিসংকেত। পরিকল্পিতভাবে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান মোবাইলে ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তুলে শিক্ষককে হেনস্তা ও গ্রেফতারের মতো ঘটনা স্বাধীন মতপ্রকাশ ও মুক্তবুদ্ধির বিকাশে বাধা সৃষ্টি করবে। এসব বিষয়ে এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন এবং তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি দাবি জানাচ্ছে।
Discussion about this post