শিক্ষার আলো ডেস্ক
গভীর রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় পর্যন্ত আজ মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে তারা। এতে ওই এলাকা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের হামলার প্রতিবাদে ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ব্যবসায়ীদের হামলার প্রতিবাদে সকাল থেকে রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। প্রাইভেটকার, রিকশা, মোটরসাইকেল সহ সব ধরনের যানবাহন আটকে দেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে আমরা রাস্তা অবরোধ করেছি। আমরা দ্রুত এর বিচার চাই।
এর আগে গতকাল রাতে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে একাধিক ছাত্র আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশের গুলিতে অন্তত ১২ ছাত্র আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন আইসিইউতে ভর্তি।
শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে পুলিশ। তাদের ভাষ্য, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও বা গুলি করা হয়নি। যথেষ্ট ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘তিনজন শিক্ষার্থী নিউমার্কেটের একটি দোকানে কেনাকাটা করতে যান। দাম নিয়ে ওই দোকানির সঙ্গে তাদের ঝগড়া হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দোকানদার ও তার লোকজন তাদের মারধর করে। পরে শিক্ষার্থীরা হলে এসে বিষয়টি জানায়। হলের শিক্ষার্থীরা একযোগে নিউমার্কেটের গেট ভেঙে ওই দোকানদারকে মারতে যান। খবর পেয়ে আমরা তাদের বাধা দেই এবং চলে যেতে বলি।’
‘আমাদের কথা শুনে শিক্ষার্থীরা পিছু হটলেও দোকানিরা সড়কে চলে আসেন। এরপর দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। আমরা শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি এবং দুইপক্ষকে নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে যেতে বাধ্য করি। এরপর শিক্ষার্থীরা আবার সড়কে অবস্থান নেন। পরে তাদের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়। শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ৩টার দিকে যার যার হলে চলে যান।’
‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি করেছে এবং সেই গুলিতে শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন’— এমন অভিযোগের বিষয়ে রমনার ডিসি বলেন, ‘আমরা কোনো গুলি করিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০০ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছি। আমাদের ৭-৮ জন সদস্য আহত হয়েছেন।’
এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চটপটি খাওয়ার পর টাকা না দেওয়ার কারণে বাগবিতণ্ডার শুরু হয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের তিন-চার জন শিক্ষার্থীর। বাগবিতণ্ডার জেরে হাতহাতি হয়। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে হামলা চালায়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিউমার্কেট এলাকায় দুই দিকে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। তবে এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতির ঘটনা ঘটেনি। দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে পুরো এলাকার থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এখনো খোলেনি নিউ মার্কেটের দোকান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
’
Discussion about this post