নিজস্ব প্রতিবেদক
গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ১০টি শর্ত দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। নির্ধারিত শর্ত পূরণের নিশ্চয়তা না পাওয়া গেলে শিগগির সাধারণ সভার মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
বুধবার জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত সবাই গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে মতামত তুলে ধরেন। তবে শর্তসাপেক্ষে এবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন।
তারা জানান, যদি পরীক্ষার আগে আগামী মে মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট শর্তগুলো পূরণের নিশ্চয়তা না পাওয়া যায় তবে অতি দ্রুত আরও একটি সাধারণ সভা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
শর্তগুলো হল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংশ্লিষ্ট ডিনদের নিয়ে গঠিত হবে ‘ইউনিট সমন্বয় কমিটি’ যারা ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় কার্যাদি সম্পাদন করবেন। এছাড়া সব উপাচার্য এবং ইউনিট সমন্বয় কমিটির প্রধানদের নিয়ে গঠিত হবে ‘কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি’- যারা সার্বিক বিষয় তদারকি করবেন; ২০২২ সালের ভর্তি পরীক্ষা অবশ্যই জুলাই মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে শেষ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে; ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে যাতে যে কেউ ফলাফল দেখতে পারে।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত স্কোর ও মেধাস্থান অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে; ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভর্তিচ্ছু বিভাগ নির্বাচন করবে এবং ভর্তির পুরো প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে; সব আবেদনকারীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করতে হবে; পরীক্ষার কেন্দ্র নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের শুধু একটি পছন্দ থাকবে এবং সেই কেন্দ্রেই পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে; পরীক্ষার আবেদন ফি ব্যতীত শিক্ষার্থীরা ভর্তিকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট বিভাগে ভর্তির জন্য শুধুমাত্র একবার অর্থ প্রদান করবে।
মাইগ্রেশন, ভর্তি বাতিল বা অন্য যেকোনো কারণে সার্ভিস চার্জ বাবদ সর্বোচ্চ একশত টাকার বেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আদায় করতে পারবে না। ভর্তি বাতিল করে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে একশ টাকা কর্তন করে জমাকৃত সমুদয় অর্থ ফেরত বা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানোয় পন্থা উদ্ভাবন করতে হবে।
আবেদন ফি থেকে প্রাপ্ত অর্থ ব্যয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এই অর্থ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজস্ব তহবিলে কোন অর্থ প্রদান করা যাবে না।
নীতিমালা অনুযায়ী অর্থ ব্যয়ে ঘাটতি দেখা দিলে ইউজিসিকে সে পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করতে হবে; বিভিন্ন কোটায় আবেদনপত্র জমাসহ ভর্তি প্রক্রিয়ার যাবতীয় কার্যাদি সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ডিন এবং চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন করতে হবে; এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন কাজে সব শিক্ষকের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে; আগামী বছরে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসহ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় আগামী বছর গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব ব্যবস্থায় অর্থাৎ এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে।
Discussion about this post