শিক্ষার আলো ডেস্ক
নিজের সঞ্চয়ের সব অর্থ বিভাগে দান করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফি আর নেই।
সোমবার রাত ১২টার দিকে (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘স্যার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি গত সোমবার ১২টা ১০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফি মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাদেশের মৎস্য খাতে স্যারের অবদান অনেক। তিনি অত্যন্ত ভালো ও প্রখ্যাত একজন শিক্ষক ছিলেন। বিভাগের ভবন নির্মাণে তিনি প্রায় ৭০ লাখ টাকা দান করেছেন।’
এদিকে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফি-এর মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এক শোক বাণীতে উপাচার্য বলেন, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফি ছিলেন একজন প্রখ্যাত মৎস্যবিজ্ঞানী এবং নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ও গবেষক। অত্যন্ত বিনয়ী, সজ্জন ও নিষ্ঠাবান এই অধ্যাপক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তিনি বিভাগের অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়নে বিপুল অংকের আর্থিক অনুদান প্রদান করে এক মহতী দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। বাংলাদেশে মৎস্যবিজ্ঞান গবেষণার পথিকৃৎ এই অধ্যাপক মৎস্যবিজ্ঞান সংক্রান্ত অনেক মূল্যবান পুস্তক রচনা করেছেন। মৎস্যবিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণায় অসাধারণ অবদানের জন্য গুণী এই অধ্যাপক স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান মরহুমের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রসঙ্গত, অর্থাভাবে ১৪ বছর ধরে একতলায় আটকে ছিল ঢাবির মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের ভবন নির্মাণের কাজ। ক্লাসরুম সংকট, ছোট গবেষণাগার ছাড়াও ঠিকমতো জায়গা হতো না শিক্ষকদের। এ অবস্থায় এগিয়ে আসেন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফি। সারা জীবনের সঞ্চয়ের প্রায় ৭০ লাখ টাকা তিনি দান করেন বিভাগের ভবন নির্মাণে।
Discussion about this post