নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির উদ্যোগে ‘বাজেট ২০২২-২৩: অতিমারী থেকে সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক প্রাক বাজেট সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুরে অধ্যাপক মুজাফফ্ফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে প্রাক বাজেট সংলাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর এবং অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনা মহামারি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতিসহ সব উন্নয়নকে টেকসই করতে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ ও সময়াবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ঘটাতে হবে।
শিক্ষায় জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন ঢাবি উপাচার্য। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে। জিডিপি এবং টোটাল বাজেটের শতকরা হারে সেটিই সর্বোচ্চ ছিল। সেখানে এখন পর্যন্ত আমরা পৌঁছাতে পারিনি। শিক্ষাখাতে জিডিপির অন্তত ৪ শতাংশ বাজেট প্রণয়ন করা উচিত। বর্তমানে যা আছে দুই শতাংশে। এছাড়া সামাজিক সুরক্ষা খাত এবং স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ন্যূনতম তিন শতাংশ বাজেট বরাদ্দ দেওয়া উচিত। এ তিনটি খাত বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতেও দেশের অর্থনীতি ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা অব্যাহত ছিল। দেশের এই উন্নয়নের ধারা আরও এগিয়ে নিতে সঠিকভাবে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সুশাসনের অভাবগুলোকে চিহ্নিত করে সেগুলো নিরসনে কাজ করার জন্য উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
মূল প্রবন্ধে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিখাতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। প্রবন্ধকারদ্বয় বলেন, বিদ্যমান ও উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে। টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়পরায়ণতা, দূরদর্শিতা এবং সামাজিক শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হবে। তারা করোনার প্রভাবে শিক্ষার ক্ষতি নিরূপণ এবং কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়নে যথাযথ অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে স্বাধীন শিক্ষা ঘাটতি মোকাবিলা কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন।
Discussion about this post