নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারি চাকরির প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অতিমাত্রায় ঝুঁকে পড়ার কড়া সমালোচনা করে একটি ‘বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয়’ খুলতে বললেন শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে এখন বিসিএস চর্চায় আছি। আমি বলি, ‘বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটা বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হোক। সেখানে ‘প্রিলিমিনারি পরীক্ষা’, ‘ভাইভা’ ইত্যাদি নামে বিভাগ থাকবে। দারুণ চলবে কিন্তু।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯মে) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এক পাবলিক লেকচারে সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টার ‘৫০-এ বাংলাদেশ: অতীত, বর্তমান এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এই বক্তৃতার আয়োজন করে।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাবে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষকরা পাত্তা পাবেন না। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সেখানে প্রাধান্য দেওয়া হবে। ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ইত্যাদি হওয়ার জন্য আজকে শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি। আমি মনে করি, আত্মসমালোচনার প্রয়োজন আছে। আমরা সব সময় অন্যের দিকে আঙুল তুলি, নিজের দিকে তুলি না। সমালোচনা যদি সবার ভেতর থেকে শুরু হতো, তাহলে হতাশা থাকত না।
বক্তৃতা অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবি সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ তিনটি কারণে আলাদা। এগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ এই অঞ্চলে একমাত্র গণপ্রজাতন্ত্র; এ অঞ্চলে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যারা একটি স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছে এবং এই দেশের অনন্য পররাষ্ট্রনীতি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সামনে পাঁচটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো-রোহিঙ্গা সংকট, করোনার মহামারিতে সৃষ্ট পরিস্থিতি, একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার পূর্বশর্ত, দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও নতুন বিক্ষিপ্ত জনগোষ্ঠী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অথবা নতুন স্নায়ুযুদ্ধ ৷
ইমতিয়াজ আহমেদের প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। এসময় নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের পরিচালক আ ক ম জামাল উদ্দীনের সঞ্চালনায় এই বক্তৃতা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘের সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড-অ্যাডভাইজারি গ্রুপের উপদেষ্টা মো. আবদুল হান্নান।
Discussion about this post