শিক্ষার আলো ডেস্ক
বর্ণাঢ্য আয়োজনে পাবন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ১৪তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। রবিবার (৫ জুন) পুরো পাবিপ্রবি জুড়ে ছিলো উৎসবমুখোর পরিবেশ। সকাল নয়টায় ১৪তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আনন্দ শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ পেরিয়ে নবনির্মিত ‘কবি বন্দে আলী মিয়া মুক্তমঞ্চ’ এর কাছে গিয়ে শেষ হয়।
এরপর ‘কবি বন্দে আলী মিয়া মুক্তমঞ্চ’ এর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। মুক্তমঞ্চের উদ্বোধন শেষে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়। এরপর এক এক করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ম্যুরাল ‘জনক জ্যোতির্ময়’, শহীদ মিনার এবং স্বাধীনতা চত্বরে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর বেলুন এবং কবুতর উড়িয়ে ১৪তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
উদ্বোধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরের সামনে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভার। এতে প্রধান অতিথি প্রধান হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত বিজ্ঞানী ড. হাসিনা খান। অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার খসরু পারভেজ এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাসিনা খান তার বক্তব্যে বলেন- “৭০-র দশকে এদেশে বলা হতো মেয়েরা বিজ্ঞানে কিংবা গবেষণায় এসে কী করবে! ওরা তো পড়াশোনাতে সময়ই দিতে পারেনা। মেয়েদের সম্পর্কে এই ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে আমি সিদ্ধান্ত মানুষের এই ভুল ধারণা দূর করতে হবে। তারপর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আজকের এই পর্যায়ে আসা। তাই এদেশের উন্নতির জন্য বিজ্ঞানে মেয়েদের এগিয়ে আসতে হবে। মেয়েরা এগিয়ে না আসলে দেশের উন্নতি সম্ভব হবেনা।”
এসময় তিনি আরও বলেন- “আমার দীর্ঘ গবেষণা জীবনে আমি কয়েকটা জিনিস শিখেছি। সেগুলো হলো নির্লোভ হওয়া, সবাই মিলে চলা, মিতব্যয়ী হওয়া, চেইন অব কমান্ড মেনে চলা। আজকে শিক্ষার্থীদের জীবনে ভালো কিছু করতে হলে বাস্তব জীবনে এই জিনিসগুলো প্রয়োগ করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন- “পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে একটাই হবে যেটা সবার জন্য রোল মডেল হবে। আগামীদিনগুলোতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক কর্মকান্ডগুলোর জন্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুসরণ করবে বলে আমি মনে করি।”
এসময় তিনি আরও বলেন- “পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন ১০০ একর করার জন্য কাজ করা হচ্ছে। গবেষণায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য এত অল্প জায়গার উপর সব কিছু করা সম্ভব না। এখানে গবেষণাগার তৈরী করতে হবে। নতুন নতুন বিষয় খুলতে হবে। সেগুলো করার জন্য আরও জায়গার প্রয়োজন। আমরা সেটা করার জন্য চেষ্টা করছি।”
সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মঞ্চে গান পরিবেশন করেন দেশের জনপ্রিয় গানের দল ‘জলের গান’।
Discussion about this post