শিক্ষার্থীদের বিদেশমুখিতা কমাতে এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে দেশে বসেই আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। বর্তমানে প্রায় ২৫ হাজার দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থী মুখরিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল মাত্র ৬৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে। শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এ পর্যন্ত বিশ্বের ৪৫০টির অধিক স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
রাজধানী ঢাকার আশুলিয়ায় প্রায় ৬০ একর জায়গার ওপর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। নাগরিক কোলাহলমুক্ত, পাখির কলকাকলীতে মুখরিত সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমিতে গড়ে উঠেছে শিক্ষাবান্ধব এই ক্যাম্পাস। সর্বাধুনিক শিক্ষা উপকরণ, অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী, আবাসন সুবিধা, উন্নত ল্যাবরেটরি, ইনোভেশন ল্যাব, সহশিক্ষা কার্যক্রম, বিশাল খেলার মাঠ, যাতায়াত-সুবিধা, উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট, টেনিস কোর্ট, গলফ কোর্স, ওয়াই-ফাইসহ সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত এ ক্যাম্পাসকে ‘ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে
কিউএস এশিয়া ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২২-এ এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অবস্থান তৃতীয়। এ ছাড়া টাইমস হায়ার এডুকেশন ইউনিভার্সিটি ইমপ্যাক্ট র্যাঙ্কিং ২০২২-এ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে এবং ইউআই গ্রিন মেট্রিক ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিং ২০২১-এ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে।
অনুষদ ও বিভাগ
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ৫টি অনুষদে মোট ২৪টি বিভাগ রয়েছে। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদের অধীনে: কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, জেনারেল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম, এমআইএস বিভাগ।
প্রকৌশল অনুষদের অধীনে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার বিভাগ। বাণিজ্য ও উদ্যোক্তা অনুষদের অধীনে রয়েছে: ব্যবসায় প্রশাসন, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, রিয়েল এস্টেট, ইনোভেশন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ, বিজনেস স্টাডিজ ও এমবিএ।
আরও পড়ুন-আইইউবিএটি: ক্যারিয়ার শুরুর সুযোগ মেলে দেশ-বিদেশে
মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে রয়েছে: এলএলবি, ইংরেজি, সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও গণযোগাযোগ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ। অ্যালাইড হেলথ সায়েন্স অনুষদের অধীনে রয়েছে: ফার্মেসি, নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং, পাবলিক হেলথ বিভাগ।
প্রতিটি বিভাগের পড়ার খরচ কেমন তা জানতে এই লিংকে ঘুরে আসতে পারেন:
সমৃদ্ধ ডিজিটাল লাইব্রেরি
শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ ও গবেষণাকর্মে সহায়তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সমৃদ্ধ ডিজিটাল লাইব্রেরি, যাতে রয়েছে দেশি-বিদেশি লক্ষাধিক বই, ২৫ হাজার রেফারেন্স বই, ১৫ হাজার ই-বুক, ২ হাজার ৫০০ প্রোজেক্ট রিপোর্ট, ২ লাখ ই-জার্নালসহ সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক ম্যাগাজিন, সিডি, ভিসিডি, ডিভিডিসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকা, ফ্রি ইন্টারনেট-সুবিধা। লাইব্রেরির সব কর্মকাণ্ডই অনলাইন ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়ে থাকে।
‘‘শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে মেধাবী এবং সেরা শিক্ষকমণ্ডলীর তত্ত্বাবধানে আধুনিক ও যুগোপযোগী সুযোগ-সুবিধাসংবলিত একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য নয়; বরং একজন নীতি-নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন সচেতন মানবিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য।’’
ল্যাব-সুবিধা
শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসংবলিত ডিজিটাল ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব, টেক্সটাইল ল্যাব, ফিজিকস ল্যাব, ফার্মেসি ল্যাব, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব, ফ্যাব ল্যাব (ডিজিটাল ফেব্রিকেশন), জেএমসি ল্যাব, সিসকো ল্যাব, মাইক্রোসফট আইটি একাডেমি, লিনাক্স, রেডহাট ও ওরাকল, মাল্টিমিডিয়া ল্যাব, ইনোভেশন ল্যাবসহ সব ধরনের ল্যাব-সুবিধা।
প্রকাশনা ও গবেষণা কার্যক্রম ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অনুষদ থেকে নিয়মিত জার্নাল প্রকাশিত হচ্ছে, যেখানে শিক্ষকদের উচ্চমানের গবেষণাকর্ম স্থান পায়। এ ক্ষেত্রে ডিআইইউ শিক্ষকেরা দক্ষতার সঙ্গে অব্যাহত রেখেছেন এ কার্যক্রম। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণাকর্মে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে রিসার্চ ডিভিশন এবং রিসার্চ ফান্ড।
সহশিক্ষা কার্যক্রম
পড়ালেখার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রয়েছে ডিবেটিং ক্লাব, স্পোর্টস ক্লাব, সায়েন্স ক্লাব, বিজনেস ক্লাস, ন্যাচারাল স্টাডি ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, সাইবার ক্যাফে, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, এমবিএ ক্লাবসহ ৩৫টি ক্লাব। শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, নিয়মানুবর্তিতা এবং কর্মঠ করে গড়ে তুলতে রয়েছে এয়ার রোভার স্কাউট গ্রুপ, বিএসসিসি ইউনিট। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে রয়েছে ইনডোর ও আউটডোরে খেলাধুলার সব আয়োজন। বাস্কেটবল গ্রাউন্ড ও গলফ কোর্স। এ ছাড়া টেনিস কোট, ব্যাডমিন্টনসহ সব ধরনের খেলাধুলার আয়োজন রয়েছে এই ক্যাম্পাসে। রয়েছে ফুটবল খেলার মিনি মাঠ ‘ফুটসাল মাঠ’। শারীরিক ফিটনেস তৈরিতে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক সরঞ্জামসমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক মানের জিমনেশিয়াম।
বিশ্ববিদ্যালয় আ্যালমনাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি হয়। দেশ এবং দেশের বাইরে আ্যালমনাইরা ড্যাফোডিল আ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যুক্ত রয়েছেন।
ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান ল্যাপটপ
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি তার যাত্রা শুরুর সময় থেকেই শিক্ষার্থীদের টেকনোলজিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছে। সেই লক্ষ্যে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় এ পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে বিনা মূল্যে ল্যাপটপ প্রদান করেছে, যাতে শিক্ষার্থীরা যথাযথভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার শিখতে পারেন। করোনার মধ্যেও ‘ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান ল্যাপটপ’ কার্যক্রম বন্ধ থাকেনি।
আবাসন-সুবিধা
শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূরীকরণে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের হোস্টেল-সুবিধা।
যাতায়াতের ব্যবস্থা: শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে বিশাল পরিবহন পুল। প্রতিদিন এই বাসগুলো বিভিন্ন রুটে শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
স্কালারশিপ
ট্যালেন্ট স্কলারশিপের মাধ্যমে আর্থিক অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শতভাগ বৃত্তি প্রদান করা হয়। উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় মেধাস্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের শতভাগ বৃত্তি প্রদান করা হয়। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় জিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃত্তি পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া সহোদর, স্বামী-স্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, খেলোয়াড়, জাতি-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ শতভাগ পর্যন্ত বৃত্তি প্রদান করা হয়। সিজিপিএ ৩.৯ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
ভর্তির প্রক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কর্মকাণ্ড সফটওয়্যার ও কম্পিউটারাইজেশনের আওতাভুক্ত। ভর্তির যাবতীয় তথ্য পেতে ড্যাফোডিল এডুকেশন নেটওয়ার্ক, ৪/২ সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, ঢাকা অথবা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটি, আশুলিয়া এই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন। অনলাইনেও ভর্তির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজনীয় টেলিফোন নম্বর: ৪৮১১৩৬৯০-৯১ বর্ধিত: ৪৪৪, ৫৫৫। মোবাইল: ০১৭১৩৪৯৩০৫০-১, ০১৭১৩৪৯৩১৪১, হেল্প লাইন: ০৯৬১৭৯০১২১২।
Discussion about this post